পটিয়া (চট্টগ্রাম) সেলিম চৌধুরী:-
পটিয়ায় একটি হাফেজি মাদ্রাসা স্থাপন করে সেখানে বালক শিশুদের সিরিয়ালি বলৎকার করে আসছিল প্রতিষ্ঠানটি পরিচালক মো: মাঈনুদ্দিন প্রকাশ মানিক (২৪)। সে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার টৈটং ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের নতুন পাড়া ইছার বাপের বাড়ির মৃত নুর আহমদ ও আনোয়ারা বেগমের ছেলে। ভূক্তভোগী বালকদের পরিবার ঘটনা জানতে পেরে ৮ মে সোমবার
রাতে মাদ্রাসাটিতে ঘেরাও করে মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মাঈনুদ্দিনকে গণধোলাই দেয়। খবর পেয়ে পটিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশু বলাৎকারী মাঈনুদ্দিন প্রকাশ মানিক’কে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাঈনুদ্দিন স্বীকার করেছে সে এই পর্যন্ত মাদ্রাসার প্রায় সব বালককেই বলাৎকার করেছে। এমনকি গতকাল সোমবার বলাৎকার করে এক শিশুকে। সে শিকার করেছে ৫ বালককে বলাৎকার করেছে। এই ঘটনায় স্থানীয় বিক্ষুদ্ধ জনতা মাদ্রাসাটিতে তালা ঝুলিয়ে দেয় এবং পটিয়া থানায় এসে অভিযোগ দায়ের করে। পটিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ড. আশিক মাহমুদ সংক্ষুদ্ধ অভিভাবকদের তার কার্যালয়ে ডেকে স্বান্তনা দেন এবং দ্রত আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, শিশুদের সাথে একান্তে কথা বলেন তাদের মানসিকভাবে উৎফুল্ল থাকার প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদান করেন। এসময় তিনি বলেন, কোন অবস্থাতেই যাতে অপরাধী পার পেয়ে যেতে না পারে সেজন্য অভিভাবকদের সহযোগিতা করতে হবে। তিনি শিশুদের শারিরীক পরীক্ষার জন্য আজই চমেকে প্রেরণ করা হবে জানান।
উল্লেখ্য, শিশু বলাৎকারী মাঈনুদ্দিন ২০১৯ সালে পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের একতা আবাসিক এলাকার এক প্রবাসীর বাড়ি ভাড়া নিয়ে আনোয়ারুল কুরআন মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠাতা করেন এবং প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল কুরআন শিক্ষা কেন্দ্রের সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে সমাজের সচ্ছল পরিবারের শিশুদের সেখানে কুরআনে হাফেজ করার প্রচার চালিয়ে ৩৫/৪০ জন বালককে ভর্তি করান। শিশুরা কিছুদিন পড়ালেখার করার পর আর মাদ্রাসায় যেতে না চাইলেও অভিভাবকরা কারণ খুঁজে পাচ্ছিলেন না। অবশেষে ঈদের পর শিশুরা বাড়ি গিয়ে একে একে ঘটনা খুলে বলতে থাকলে অভিভাবকরা পরস্পরের সাথে যোগাযোগ করে জানতে পারেন যে তাদের সকল শিশুই মাদ্রাসাটির পরিচালকের বলাৎকারের শিকার হয়েছেন। শিশুদের মধ্যে নাফিজ ও ইফাজ (ছদ্মনাম) পটিয়া থানায় এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, আবাসিক মাদ্রাসা হওয়ায় হুজুর তাদেরকে তার রুমে নিয়ে গিয়ে আদরের নামে তাদের পায়ুপথে যন্ত্রনা দিত। তারা যেন তাদের বাবা-মায়ের নিকট এসব না বলে। যদি বলে তাহলে পড়ালেখায় অনীহা বলে তাদেরকে পিতা-মাতার কাছ থেকেও মার খাওয়ানোর হুমকি দিত।