মোঃমহিউদ্দীন খাঁন।কমলগনঞ্জ (মৌলভীবাজার)প্রতিনিধিঃ
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে মরহুম মোহাম্মদ ইলিয়াছ এমপি’র ৩৪ তম মৃত্যু বার্ষিকী পালিত হয়েছে। উপজেলা শ্রমিক লীগের উদ্যোগে শহরের কলেজ রোডে পৌর কবরস্থানে মরহুমের কবর জিয়ারত ও পুষ্পস্তবক অর্পন করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় আ’লীগের সদস্যও কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক রফিকুর রহমান,কমলগঞ্জ উপজেলা আ’লীগেরসভাপতি আসলাম ইকবাল মিলন,সম্পাদক এএসএম আজাদুর রহমান,শ্রীমঙ্গল আ’লীগেরসিনিয়র সহ-সভাপতি মো.ইউছুব আলী,সাংগঠনিক সম্পাদক আবু কায়সার লাভলু,উপজেলা শ্রমিক লীগ সভাপতি মো. শাহিন সম্পাদক আরজু মিয়া,উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি সাজ্জাদুর রহমান চৌধুরী সাজু,সম্পাদক কদর আলী ও ইলিয়াছ এমপির ছেলে সারোয়ার চঞ্চল সহ অর্ধ শতাধীক আ’লীগের নেতাকর্মী।
মরহুম ইলিয়াছ ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, বাংলাদেশ আ’লীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য, ভাষা সৈনিক, সাবেক এম,এন,এ, মৌলভীবাজার-৪ (কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর, কিংবদন্তী ও সৎ রাজনীতিবিদ।
তিনি ৫২’র ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ৬৯’এর গণ আন্দোলন, ৭১’এর মুক্তিযুদ্ধ সহ দেশ ও জাতির ক্রান্তিলগ্নে বার বার রাজপথে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। কোন কিছুই তাকে টলাতে পারেনি। ছিল না কোন লোভ লালসা। ছিলেন রাজপথের অকুতোভয় লড়াকু সৈনিক। অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবিচল ছিলেন আমৃত্যু। তাঁর এই মহানুভবতা শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ তথা বৃহত্তর সিলেট বিভাগের মানুষকে করেছেন সম্মানিত। রাজনৈতিক ইতিহাসের পাতায় পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লিখা তাঁর নাম।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যোগ্য সহকর্মী হিসেবে রাজনীতিকে আদর্শের পথে চালিত করেছেন দৃঢ় চিত্তে। সর্বস্ব খুইয়েও নীতি আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি মূহুর্তের জন্যও। রাজনীতির দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় অনেক আসনকে যেমন করেছিলেন অলংকৃত, তেমনী বঙ্গবন্ধু ও তাঁর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহান এই নেতাকে জাতীয় ও স্থানীয় বিভিন্ন পদে আসীন করে দিয়েছেন যোগ্য সম্মান। ক্ষণজন্মা এই রাজনৈতিক মহাপুরুষের জন্য সিলেটবাসী আজও গর্ববোধ করে।
মোহাম্মদ ইলিয়াস ১৯২৯ সালের ১ অক্টোবর মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের কুসালপুর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতা মৌলভী মোহাম্মদ তাহির ও মাতা মোছাঃ জুবায়দা খাতুন। তিনি মৌলভীবাজার সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর ঢাকা কলেজ থেকে তিনি আইএসসি পাশ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসি পাশ করেন।
মোহাম্মদ ইলিয়াস ১৯৪৮ সালে রাজনীতিতে যোগদান করেন। তিনি ভাষা আন্দোলনের সক্রিয় সদস্য ও পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন। ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে ছিলো তাঁর সক্রিয় অংশগ্রহণ। ১৯৬৭ সাল থেকে তিনি শ্রীমঙ্গলে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। ১৯৬৯ সালে তিনি পূর্ব পাকিস্থানের এমএলএ নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৬৯ সালের শেষ দিকে বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে আওয়ামীলীগে যোগ দিয়ে কেন্দ্রীয় সদস্য হিসেবে আমৃত্যু দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭০ ও ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৮৭ সালের ২১ নভেম্বর এই জাতীয় নেতা মৃত্যুবরণ করেন।