সাংবাদিক এস চাঙমা সত্যজিৎ স্টাফ রিপোর্টার খাগড়াছড়ি জেলা :
আজও লক ডাউনের দ্বিতীয় দিন। খাগড়াছড়িতে শুক্রুবার (০২ জুলাই ২০২১) সকাল থেকে জেলা – উপজেলার সব সড়ক যোগাযোগ বন্ধ। কোনো যান বাহন চলাচল করতে দেখা যায়নি। মাঝে মধ্যে দু’একটা অটোরিক্সা, টমটম মটর বাইক চলাচল করতে দেখা গেলেও বিশেষ বিশেষমানুষের প্রয়োজনে এগুলো দেখা যায়। মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় কেনাকাট্ করার জন্য, চিকিৎসার জন্য, ঔষুধপত্র কেনার জন্য, ডাক্তার দেখাতে যাওয়ার জন্য এসব টমটম, অটোরিক্স্ নিয়ে যেতে দেখা গেছে। গতকাল ০১ জুলাই থেকে ০৭ জুলাই ২০২১ বুধবার মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত এবারের লক ডাউন বলবৎ থাকবে বলে সরকার ঘোষণা দিয়েছে। মহামারি করোনা ভাইরাস কোভিড -১৯ প্রতিরোধ করার জন্য সরকার লক-ডাউনের (শার্টডাউন) ঘোষণা করে। প্রথম দিনের মতো দ্বিতীয় দিনেও প্রশাসন স্বাস্থ্যবিধিসহ বিধি – নিষেধ পালন ও জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় প্রশাসন কঠোরতর থেকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ।
আজও (০২/০৭/২১ ইং) শুক্রবার সকাল থেকে মাঠে নেমেছে পুলশ, বিজিবি, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে মাইকে মাইকে প্রচার চালাচ্ছে অলি গলি শহর নগর গ্রামে গঞ্জেও। মাইকে আওয়াজ হচ্ছে একটি বিশেষ ঘোষণা “এ আইন অমান্য করিলে এক বছর জেলে দেওয়া হইবে”। তারপরও একাধিক গাড়ীতে করে মোবাইল কোর্টের ঘুরাঘুরি করতে দেখা গেছে ।
খাগড়াছড়ি জেলার সদর উপজেলা, পানছড়ি উপজেলা, দীঘিনালা উপজেলা, মহালছড়ি উপজেলা, মাটিরাঙা উপজেলা, গুইমারা উপজেলা, রামগড় উপজেলা, মানিকছড়ি উপজেলা ও লক্ষীছড়ি উপজেলায়ও লক ডাউন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসন আইনের কঠোরতর পদক্ষেপ নেওয়ার প্রত্যেকটি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেস।
খাগড়াছড়ি জেলা সদরে আজ শুক্রবার জুমার বারের দিন হলেও মুসল্লিদেরর উপস্থিতির হার তেমন দেখা যায়নি, জুমার নামাজে মুসল্লিদের উপস্থিতি দেখা গেলেও স্বাস্থ্য বিধি মেনে মসজিদে নামাজ আদায় করতে আসেন। মুসল্লিদের সবার মুখে মাস্ক ছিলো। কিন্তু আগের মতো তেমন ভীড় না থাকায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে জুমার নামাজ আদায় করলেন মুসল্লিরা।
এদিকে খাগড়াছড়ি শহরের শপিংমল/মার্কেট ও দোকান – পাটসহ আটটি (০৮)টি উপজেলার বাজারগুলোতেও কঠোর থেকে কঠোরতর লক-ডাউনের ব্যবস্থা বলবৎ রয়েছে বলে সূত্র জানায় । আর দূর পাল্লার গণ-পরিবহন তো বন্ধই রয়েছে। আরও জানা গেছে স্থানীয় পরিবহণও বন্ধ রয়েছে। কোথাও কোনো পরিবহণ বা যানবাহণ চলাচল করতে দেখা যায়নি। এমন কি সাইকেল নিয়েও লোকজন আসা যাওয়া করতে চোখে পড়েনি। সমস্ত জেলা ও উপজেলার সড়কগুলো একেবারেই ফাঁকা জনমানবহীন। জরুরী সেবা ছাড়া কোনো যান বাহন চলাচল করতে দেখা যায়নি। দু’একটা দেখা গেলেও বিশেষ বিশেষ জরুরী প্রয়োজনে বের হতে দেখা যায়।
আইন-শৃঙ্খলা ও জরুরি পরিসেবা, কৃষি পণ্য ও উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি, খাদ্য শস্য পরিবহণ ), খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহণ, স্বাস্থ্য সেবা, বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মচারী, গণমাধ্যমের সংবাদপত্র কর্মীবাহিনী (প্রিন্ট মিডিয়া অনলাইন ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া), ব্যাংক, ফার্মেসিসহ অন্যান্য জরুরি/অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ যানবাহন প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়পত্র প্রদর্শন সাপেক্ষে যাতায়াত করতে চোখে পড়েছে। গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, আনসার টহল দিতে দেখা যায়।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, লক-ডাউন পালনে আমাদের পক্ষ থেকে প্রশাসন সতর্কতার সহিত কঠোর অবস্থানে রয়েছে। এছাড়াও জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে শহর অলি গলিতে গ্রামে গঞ্জে গাড়িতে করে মাইকের মাধ্যমে প্রচার চালানো হচ্ছে। শহর ও গ্ৰামের জনগনকে সরকার ঘোষিত লক ডাউনের সকল প্রকার আইন শৃঙ্খলাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহবান জানানো হচ্ছে এবং অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বের না হওয়ার জন্য সারাদিন প্রচার প্রচারণা চালানো হচ্ছে। সকল জনসাধারণকে ঘরে থাকতে বলা হচ্ছে। সদর উপজেলাসহ ৮টি উপজেলাতেও আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি প্রতিদিনের মতো প্রত্যেকদিন ভ্রাম্যমান আদালত সার্বক্ষণিক মাঠ পর্যায়ে কাজে থাকবেন বলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ।