সিরাজগঞ্জ(সলঙ্গা) থেকে ফারুক আহমেদঃ
করোনা ভাইরাস ও লকডাউনের কারণে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা বন্ধ থাকার কারণে ফ্রি ফায়ার – পাবজি গেমে আসক্তি হচ্ছে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানাসহ তিনটি উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম – গঞ্জের কিশোর তরুণ তরুণীরা। যদিও গেম আসক্তি বিষয়টি ইন্টারনেট আসক্তি থেকে খানিকটা আলাদা। কখনো দেখা যায় ইন্টারনেটে কেউ অতিরিক্ত পরিমাণে গেম খেলছে, কেউ পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত, কেউবা নানা সফটওয়্যার বা এসব নিয়ে মশগুল আর কেউবা ফেসবুকসহ নানান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যয় করছে দিনের বেশির ভাগ সময়। মোট কথা সবই হচ্ছে ননকেমিক্যাল অ্যাডিকশন বা আচরণজনিত আসক্তি। বিশ্বজুড়ে এই বিষয়ে প্রকাশিত ১৬টি গবেষণাপত্রের মেটা অ্যানালাইসিস করে দেখা গেছে বর্তমানে মোবাইল গেমের ভিতরে সব থেকে ফ্রি ফায়ার পাবজি অনলাইন গেমে দেশি -বিদেশী গেমারের সাথে র্কিশোর, তরুণদের তরুণীদের মধ্যে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ ইন্টারনেট গেমিংয়ে আসক্তিতে ভুগছে। যাদের মধ্যে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ হচ্ছে কিশোর আর ১ দশমিক ৩ শতাংশ কিশোরী (জে ওয়াই ফ্যাম, ২০১৮)।
কিছু গবেষণায় দেখা গেছে গেমিং ডিজ অর্ডারের অতি উদ্বিগ্নতা, বিষগ্নতা এবং তীব্র মানসিক চাপের মতো মাসিক রোগ দেখা দিতে পারে। সাইবার অপরাধের শিকার হওয়া বা সাইবারজগতের অপরাধে আইনি ঝামেলায় পড়ে যেতে পারে। এমনকি হত্যার মতো অপরাধও। খেলার ধরন গেরিনা ফ্রি ফায়ার একটি অনলাইন এ্যাকশন – অ্যাডভেঞ্চার ব্যাটল রয়্যাল গেম যা তৃতীয় ব্যক্তির দৃষ্টিকোণে খেলা হয়। গেমেটি অন্যান্য খেলোয়াড়কে হত্যা করার জন্য অস্ত্র এবং সরঞ্জমে সন্ধানে একটি দ্বীপে প্যারাসুট থেকে পড়ে আসা ৫০ জন ও তার অধিক খেলোয়ারকে আওতা ভুক্ত করে। যা মস্তিস্কের যে অংশ রিক্তয়ার্ড সেন্টার ইয়াবা বা গাঁজার মতো বস্তর প্রতি আসক্তি নেয় ঠিক সেই অংশেই কিন্তু ইন্টারনেট বা গেমের প্রতি টাকা দিয়ে খেলতে আসক্তি জন্মায়। প্রায় এক বছর চার মাস যাবৎ করোনাভাইরাস কারণে দফায় দফায় কঠোর লকডাউনের কারণে কর্ম সংকটে বেকার হচ্ছে দিনমজুর ও মধ্যবিত্তরা। দিন দিন তা ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। কাজের অভাবে দিনমজুর শ্রেণীর মানুষেরা বেকার হয়ে পড়েছে সিরাজগঞ্জের তিনটি উপজেলার প্রত্যন্ত উঞ্চলের শ্রমজীবী ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ। তারা বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে ও দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে। কাজকর্মে জন্য বাড়ি থেকে বেড় হতে না পারাই পরিবারে ঠিক মতো খাবারের ব্যবস্থা করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। কাজ না থাকায় দিনমজুররা হতাশ হয়ে মলিন মুখে বাড়ি ফিরেছে ভ্যান শ্রমিক সলঙ্গা আমশড়া গ্রামের উজ্জ্বল মিয়া। তাড়াশ উপজেলার রানিদীঘি গ্রামের কস্টমেটিক ব্যবসায়ী শিপন সরকার বলেন, তৃতীয় দফায় কোঠর লকডাউন শুরু হওয়ায় আমার ব্যবসা মন্দা অবস্থায় থাকায় ঋণের জালে আটকে গেছেছি। বেকারত্ব যেন পিছু ছাড়ছে না কিছুতেই। জীবন সংগ্রামে অবিরাম যুদ্ধে আজ আমি ক্লান্ত হয়ে পড়েছি।
সিরাজগঞ্জ সলঙ্গা খুদ্দর্শিমলা গ্রামে আরিফল ইসলাম জানান, করোনাভাইরাস ও লকডাউনের কারণে জীবন সংগ্রামে অবিরাম যুদ্ধে ঋণের জালে আটকে যাচ্ছে গ্রামঞ্চলের অনেক মানুষ।
অর্থনীতিতে এর দীর্ঘ মেয়াদী নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।