শাহাবুদ্দিন মোড়ল ঝিকরগাছা উপজেলা প্রতিনিধি:
যশোরের কোভিড-১৯ থেকে রক্ষা করতে লাল সবুজের পতাকা পড়ে মাঠে আছে মাস্ক বিক্রেতা শামীম আহমেদ মনা। সততাকে মূলধন বানিয়ে যদি সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া যায়। তাহলে নিশ্চই সকলেই সাফলতা আসবেই। যার বাস্তবতায় কাজ করে চলেছেন যশোরের বকচর হুশতলা গ্রামের এই ব্যক্তি। বাড়িতে পুঁজি বলতে একটা মাত্র সেলাই মেশিন। তিনি পেশায় ছিলেন একজন পোশাক কারিগর বা দর্জি। পরিবারের ৪সদস্য নিয়ে গড়ে ওঠা সোনার সংসার। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও শিশুদের পোশাক নিজ হাতে তৈরি করা স্কুল ড্রেস, ঘটি প্যান্ট, জামা, ফতুয়া বিক্রির উপার্জিত অর্থ দিয়ে স্রষ্টার অসীম কৃপায় মোটামোটি সংসারটা ভাল ভাবে চলতো। হঠাৎ দেশে ২০১৯ সালের শেষের দিকে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণের উৎপত্তি দেখা যায় এবং দেশে শুরু হয় টানা লকডাউন। আর এই লকডাউনের মধ্যে তার ব্যবসায় ভাটা পড়ে। তিনি কি করবেন ? কি করে তার সংসারের হাল ধরবেন এটা নিয়েই দিশেহারা হয়ে যান। সংসারে অভাব-অনটন যেন তার নিত্যদিনের সঙ্গী। সংসারে আজ চাল থাকলেও তরকারী থাকে না, তরকারী থাকলেও চাল থাকে না। এভাবেই জীবন-জীবিকা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলতে থাকে। প্রবাদে বলে, স্রষ্টা কম রুজি করে কিন্তু তার বান্দাকে নিরাশ করেন না। এই কথাকে মনের সামনে এনে মনা ২০২০সালের শুরু থেকেই নেমে পড়েন নতুন এক ব্যবসায়। করোনা প্রতিরোধ সামগ্রী বিক্রির ব্যবসা। এই ব্যবসায় তার নিজের এবং সেই সাথে দেশের মানুষেরও উপকার হবে বলে তিনি আশাবাদি। ব্যবসায়ের নতুন পদ্ধতি হিসাবে বাংলাদেশের পতাকার রঙের লাল সবুজ কাপড় দিয়ে নিজের তৈরি করা পোশাক পরিধান করে যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলাসহ বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জে পায়ে হেঁটে করোনা ভাইরাস থেকে সচেতন করতে বাজারের কেনা ও নিজের তৈরী করা মাস্ক বিক্রয় করে চলেছেন। তিনি বাজারের কেনা মাস্ক ৫পিচ ১০টাকা এবং নিজের তৈরি করা মাস্ক প্রতি পিচ ১০টাকা হারে বিক্রয় করেন। সারদিন মাস্ক বিক্রয় করা পরে দিনশেষে মূল অর্থ বাদ দিয়ে এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা উপার্জন করেন তিনি। চলতে পথে সে যদি কোন ব্যক্তির মুখে মাস্ক না দেখেন তাহলে সেই ব্যক্তির পকেটে টাকা না থাকলেও তিনি বিনামূল্যে মাস্ক দিতে দেখা গেছে।
মাস্ক বিক্রেতা শামীম আহমেদ মনা জানান, আমি গরিব মানুষ ভাই। আমি তো মহামারী করোনা ভাইরাসের সময় কারো পাশে থাকতে পারবো না। তবুও আল্লাহর অশেষ রহমতে আমি জনসেবা মূলক কাজ করে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। যে কাজ করে মানুষের পাশে থাকা যায় এবং সবার ভালবাসা পাওয়া যায় এমন কাজ বর্তমানে ক’জন ব্যক্তি করে ?