

ফারুক আহমেদ, সিরাজগঞ্জ (সলঙ্গা) প্রতিনিধি:
লকডাউনে হাট বসা নিয়ে শঙ্কায় খামারিরা
আসন্ন ঈদুল আযহা কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে সিরাজগঞ্জ রায়গঞ্জ উপজেলায় কৃষকের ঘরে ও খামারে শত শত গরু প্রস্তত বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায়। তবে চলমান করোনা মহামারীর কারণে দেশব্যাপী চলমান ‘কঠোর লকডাউনে’ হাট বসা এবং চোরাইপথে পাশের দেশ থেকে পশু প্রবেশ নিয়ে শস্কিত ও অনলাইনে বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় খামারিরা। তারা বলছেন, আদি যুগে যখন হাট -বাজার ছিলোনা তখন ঐ যুগে মানুষেরা যে অসুবিধা ছিল তা আজ করোনা আসার কারণে হাট -বাজার সরকারি ভাবে অনুমতি না দেওয়ায় অনলাইনে পশুর হাট বসায় হারে হারে টের পাচ্ছি। আমরা ক্রেতা ও বিক্রিতারা কথায় যাবো কি করো বুঝতে পারছিনা কোরবানি দেওয়া নিয়ে শস্কায় আছি। আগামি কাল সোমবার রায়গঞ্জ উপজেলার সর্ববৃহত্ত সলঙ্গা পশুর হাট। সরকার এই সর্ববৃহত পশুর হাটের অনুমতি না দিলে তারা বড় ক্ষতির মধ্যে পড়বেন। তারা আরো ক্ষোফ প্রকাশ করে বলেন, বিভিন্ন খেলা ধুলোয় লাক্ষ্য লক্ষ্য দশর্কদের স্রোত তাতে করোনা হয় না। যত সব গরিবদের বেলায় আর মসজিদে মুসলিদের জন্য।
আসন্ন কুরবানির ঈদকে সামনে রেখে রায়গঞ্জের গ্রামঞ্চের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই প্রাকৃতিক উপায়ে গরু মোটাতাজা করা হয়েছে। প্রতিটি বাড়িই এখন একটি খামারে পরিণত হয়েছে অল্প কয়েক মাসে গরু, ছাগল, ভেড়া লালন পালন করে অধিক লাভজনক ব্যবসা হওয়ায় প্রতি বছরেই খামারের সংখ্যা বাড়ছে এসব খামারে তৈরি হয়েছে অনেক লোকের কর্মসংস্থান। তাদের দাবি, পুরোপুরি প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে এবং দেশীয় খাবার খাইয়ে পশুগুলোকে লালনপালন করেছেন তারা।
রায়গঞ্জ উপজেলার সলঙ্গা থানার ৩নং ধুবিল ইউনিয়নের আমশড়া গ্রামের খামারি আব্দুল রাজ্জাক জানান, শুনেছি পার্শ্ব বর্তীদেশ মায়ানমার ও ভারত থেকে গরু আসতে শুরু করেছে। তার পরেও আমার খামারে দেশি জাতের ১০টি গরু ঈদের হাটে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। তিনি আশা করেন, ৩টি ষাঁড়, ৬টি গাভী তিনি প্রায় ১০ লাখ ৫৫ হাজার টাকায় বিক্রি করতে পারবেন। এছাড়া ইছিদাহ এলাকার আব্দুর রহিম ১০টি খাসি প্রস্তুত করেছেন বিক্রির জন্য। আমশড়া গ্রামের মোকছেদ, আশাফুল, হুকুমালী, শামিম হোসেন জানান, তাদের খামারে ৪টি ব্রাহামক্রস ও দেশি জাতের ষাঁড়, ৪টি দেশি জাতের বলদ ও ১১টি খাসি,২০টি ভেড়া কোরবানির হাটে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছেন। আরোও এক খামারি রুবেল মিয়া বলেন, দেশীয় খাবার ও প্রাকৃতিক ঘাস-খড় খাইয়ে দেশি জাতের ২৪টি ষাঁড় প্রস্তুত করেছেন বিক্রির জন্য।
তবে শঙ্কা প্রকাশ করে এসব খামারি বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে দেশব্যাপী ‘কঠোর লকডাউন’ চলমান থাকায় কোরবানির পশুর হাট আগামি সোমবার ঐতিহ্যবাহি বিশাল সলঙ্গায় না বসলে এবং পাশের দেশ থেকে চোরাইপথে পশু প্রবেশ করলে অনলাইনে পশুর হাটে অল্প সংখ্যক পশু বিক্রি করলে লোকসানের মুখে পড়বেন। কোরবানির পশুর হাট বসতে লকডাউন শিথিল করা এবং ভিন্নদেশ থেকে পশু প্রবেশ বন্ধ রাখতে সরকারের কাছে আবেদন জানান তারা।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. রিদয়ন আহমেদের সাথে মোবাইল ফোনে যোগা -যোগ করার চেষ্টা করলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেলে পরে উপজেলার বিএস প্রাণি সম্পাদ কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম এই প্রতিনিধিকে জানান,রায়গঞ্জ উপজেলায় এবার কোরবানির পশুর চাহিদা ২০ হাজারের মতো। এবার এখানকার খামারগুলোতে সাড়ে ৫ হাজারেরও বেশি গবাদি পশু উদ্বৃত্ত আছে। তাদের তত্ত্বাবধানে এখানকার খামারিরা স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ পরিত্যাগ করে সম্পূর্ণ দেশীয় খাবার খাইয়ে পশুগুলোকে লালনপালন করেছেন। বর্তমান ‘কঠোর লকডাউনের’ কারণে পশু বিক্রিতে কিছুটা বিঘগ্ন হতে পারে বলে তার ধারণা। তবে গত তিন বছরের মতো এবারও দেশীয় পশুর মাধ্যমেই কোরবানির চাহিদা পূরণ হবে আশাবাদ ব্যক্ত করে এ কর্মকর্তা জানান, ভিনদেশি পশু প্রবেশে সরকার যে কঠোর অবস্থানে আছে, সেটা যেন অব্যাহত থাকে তিনি আরো বলেন, আমাদের রায়গঞ্জ উপজেলায় অনলাই পশুর হাটনামে একটি পেজ খোলা হয়েছে এতে করে এবার উপজেলার গরুগুলো সহজে খামারিরা বিক্রি করতে পারিবে।