হাকিকুল ইসলাম খোকন ,যুক্তরাষ্ট্র সিনিয়র প্রতিনিধিঃ
আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার ও এই জনিত সহিংসতা প্রতিরোধে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৬ জুন) নিউইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমো এই ঘোষণা দেন। নিউইয়র্কের গভর্নর বলেন, কেউ যদি বলেন- যুক্তরাষ্ট্রে করোনার তুলনায় বন্দুক হামলা ও সহিংসতার কারণে বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে, সেক্ষেত্রে দেশের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান লক্ষ্য করলে এই মন্তব্য উড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই। তিনি বলেছিলেন, করোনা দেখা দেওয়ার পর যেভাবে আমরা একে প্রতিহত করার উদ্যোগ নিয়েছিলাম, এখন বন্দুক সহিংসতা বন্ধেও আমাদের তৎপর হওয়ার সময় এসেছে। নিউইয়র্ক রাজ্যবাসীকে সচেতন ও সতর্ক করার জন্যই এই জরুরি অবস্থা জারি করা হলো।
যুক্তরাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, সম্প্রতি ৪ জুলাই দেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ঘোষিত ছুটিতে দেশ জুড়ে বন্দুক হামলা ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে শুধু নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যেই ঘটেছে ৫১টি হামলার ঘটনা।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সম্প্রতি এসব হামলায় ২০০-এরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
নিউইয়র্কের গভর্নরের কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাজ্যজুড়ে বন্দুক হামলার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে একে জনস্বাস্থ্য ও জনজীবনের জন্য হুমকি হিসেবে হুমকি হিসেবে উল্লেখ করে গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমো বরাবর এই জরুরি অবস্থার প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছিল; এবং মঙ্গলবার গভর্নরের ঘোষণার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম অঙ্গরাজ্য হিসেবে নিউইয়র্কে বন্দুক সহিংসতার বিরুদ্ধে জরুরি অবস্থা জারি হলো। মঙ্গলবারের ঘোষণায় গভর্নর কুওমো জানিয়েছেন, জারি করা এই আদেশের আওতায় বন্দুক সহিংসতা বিষয়ক বিস্তারিত তথ্য এ-সংক্রান্ত প্রতিরোধ ইউনিটের কাছে দেবে অঙ্গরাজ্যের পুলিশ বিভাগ। নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের ঝুঁকিপূর্ণ যুবসমাজের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচিতে ব্যয় করা হবে ৫৭ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার।
এ কাজের জন্য নতুন ২১ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে বলে জানিয়েছেন গভর্নর কুওমো। এসব কর্মসংস্থানের ব্যয়ভার অঙ্গরাজ্য বহন করবে।
চলতি বছর মার্চে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা ও আইন প্রয়োগ সংস্থা এফবিআই-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের চেয়ে ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলাজনিত কারণে মৃত্যুর হার বেড়েছে ২৫ শতাংশ। ২০২১ সালে দেশজুড়ে এ পর্যন্ত যত অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে, তার অধিকাংশই ঘটেছে বন্দুক সহিংসতাজনিত কারণে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও দেশে সম্প্রতি বাড়তে থাকা বন্দুক হামলা ও সহিংসতায় উদ্বিগ্ন। গত জুনের শেষ দিকে তিনি জানিয়েছিলেন, ক্রমবর্ধমান এই সহিংসতা রুখতে খুব দ্রুতই পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করবে কেন্দ্রীয় প্রশাসন।