

এমরান হোসেন,লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
লক্ষ্মীপুরে রিয়াজ ও রুবেল নামের দুই বখাটের উৎপাতে এলাকার বিভিন্ন বয়সী নারীসহ পুরুষরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। প্রকাশ্যে গাঁজা, ইয়াবা সেবনসহ রাতে বিরাতে কন্যা শিশুসহ নারীদের যৌন নির্যাতন করে আসছে ওই বখাটে। এই নিয়ে কয়েকবার কারাভোগ করার পরে বেরিয়ে এসে তারা যেন আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ঘটনাটি জেলা সদরের চররুহিতা ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের। পাতুর বাড়ীর নিজামুদ্দিন প্রকাশ বুশার ছেলে বখাটে রিয়াজ পেশায় সিএনজি চালক ও একই বাড়ীর মিলনের ছেলে রুবেল ইয়াবা ব্যবসায় রিয়াজের সহযোগী বলে জানা গেছে।
সিএনজি চালনার আড়ালে রিয়াজ ও রুবেল সহ এলাকায় গোপনে গাঁজার ব্যবসা করে আসছিলো। পরবর্তীতে ইয়াবা ব্যবসা লাভজনক হওয়ায় সেই ইয়াবা সেবনের পাশাপাশি বিক্রি করেও আসছে। এতে স্থানীয় উঠতি বয়সী ছেলেদের ইয়াবা সেবনে উদ্বুদ্ধ করে আসছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। তারা আরো জানান, প্রকাশ্যে দিনের বেলায় ইয়াবা সেবন করে নারীদের জড়িয়ে ধরা, উলঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা, কিশোরীদের গায়ে হাত দেয়াসহ নারীদের ঘরে ঢুকে কুরুচিপূর্ণ আচরণ করে।
স্থানীয়ভাবে কয়েকবার সালিশ বৈঠক হলে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পেয়ে আবার বিভিন্ন বয়সের নারী, কন্যা শিশু-কিশোরীদের খারাপ প্রস্তাব দিয়ে টাকা সাদে। রাতে বিভিন্ন প্রবাসী ও দিনমজুরের ঘরের সামনে ওতপেতে থাকে এতে। কেউ প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গেলে জোর করে জড়িয়ে ধরে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। সম্ভ্রম হারিয়েও লোকলজ্জার ভয়ে, মান সম্মানের কথা চিন্তা করে অনেকে নারীই মুখ খুলছেন না।
ভুক্তভোগী নারীদের মধ্যে মিজি বাড়ির প্রবাসী বেলাল হোসেনের স্ত্রী এক সন্তানের জননী রেনু আক্তার, একই বাড়ির সিরাজের অবিবাহিত মেয়ে সুমাইয়া আক্তার, সিরাজের স্ত্রী লুৎফা বেগম, প্রতিবন্ধী জামাল উদ্দিনের স্ত্রী পেশোয়ারা বেগম ও তাদের অবিবাহিত কন্যা নিপু আক্তার, খোরশেদের স্ত্রী জোহরা বেগমসহ এলাকার বিভিন্ন বয়সী কিশোরী, যুবতী ও মধ্যবয়সি নারীদের যৌন নিপীড়নের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে মাসুম পাটোয়ারী, মিঠু পাটোয়ারী, ঝন্টু পাটোয়ারী, নুরু পাটোয়ারীসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ওয়ার্ড মেম্বারের মাধ্যমে কয়েকবার সালিশ বৈঠকে বসেও রিয়াজকে সংশোধন করতে পারেননি বলে জানান। তারা বলেন রিয়াজ আজ একটা বখাটে ছেলে। সে ইয়াবা সেবন করে বিভিন্ন নারীদের যৌন নিপীড়ন করে। রিয়াজকে কিশোরীকে ধর্ষণ চেষ্টাকালে হাতেনাতে ধরে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। কিছুদিন জেল খেটে সে আবারও নারীদের উত্ত্যক্ত করে।
ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি মামুন পাটোয়ারী বলেন- ‘রিয়াজের উৎপাতে এলাকায় নারীরা নিরাপত্তাহীন। শিশুকন্যা, কিশোরীরা ভয়ে ঘর থেকে বের হতে পারছে না। ইয়াবা সেবন করে এসে যাকে তাকে জড়িয়ে ধরছে, আমরা এ বখাটের কাছ থেকে মা-বোন কন্যাদের নিরাপত্তা চাই প্রশাসনের কাছে।’
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সেলিম পাটোয়ারী বলেন- ‘রিয়াজ একটা খারাপ চরিত্রহীন ছেলে, তার মা খুকি বেগমও চরিত্রহীন। কয়েকবার সালিশ বৈঠকের পরও সে সোজা হয়নি। আমি এ বিষয়ে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করি।’
সাবেক জেলা ছাত্র নেতা আব্দুল জব্বার লাভলু বলেন- ‘স্থানীয় বখাটে হলেও আমরা তাকে সংশোধনের চেষ্টা করছি, যদি সে সংশোধন না হয় তাহলে পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’