মোঃ আবুল কাশেম, জেলা প্রতিনিধি:
মসজিদে মসজিদে করোনা জীবাণুর বিরুদ্ধে আল্লাহর রহমত (সৃষ্টিকর্তার রহমত) কামনা করে ভোলা জেলার ঈদুল আজহার মোনাজাত সম্পন্ন হয়েছে। সর্বস্তরের ধর্মপ্রাণ মুসলমান ঈদের নামাজে অংশ নিয়েছে ও মোনাজাতে শরীক হতে দেখা গেছে। প্রতি বছরের চেয়ে কোন বেশী ব্যতিক্রম এইবারের ঈদে লক্ষ্য করা যায় নাই। একাধিক এলাকার নেতৃস্থানীয় ব্যাক্তিবর্গ তাদের মাননীয় সাংসদের শুভেচ্ছা জানানোর ব্যানার ও পোষ্টার লাগিয়ে রাজনৈতিক ঈদের আনন্দ জমজমাট করেছে। বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরাও তাদের দলীয় নেতাদের নামে ঈদের শুভেচ্ছা ও ঈদ মোবারক জানানোর পোষ্টার লাগাতে দেখা গেছে। এইবারের কোরবানির ঈদকে কাজে লাগিয়ে কোন রাজনৈতিক আধিপত্যবাদের সাহস কাউকেই দেখাতে দেখা যায় নাই। ঈদ মোবারক জানানো, ঈদের কোলাকুলি, পাকা দাড়ি ও চুলকে মেহেদী মাখা রঙ্গিন করে সাদা পায়জামা পাঞ্জাবি ও দামী টুপি পরিহিত ও দামী জায়নামাজী মুসল্লিরা দিনের শুরুতে খুব ভোরের পরই মসজিদে মসজিদে প্রবেশ করেছে। ঈমাম সাহেবদের সম্মুখবর্তী কাতারে নিজস্ব জায়নামাজ বিছিয়ে অবস্থান নিয়ে ইমামের কোরবানির সম্পর্কিত বয়ান ও নসিহত শ্রবন করতে দেখা গেছে। বিচ্ছিন্ন কিছু কথাবার্তা ছাড়া বেশীরভাগ ইমামদের কথাবার্তায় পূর্ব প্রস্তুতি মূলক সংযত কথাবার্তায় ওয়াজ ও বয়ান করতে দেখা গেছে। রাজনীতি ও রাজনৈতিক হাল বিষয়ের বয়ান থেকেই বেশীর ভাগ মসজিদের ইমামকে এইবার এই প্রথম সতর্ক কথায় ওয়াজ নসিহত করতে দেখা গেছে। ক্বওমি মাদ্রাসার ছাত্র ও শিক্ষকদের দ্বারা পরিচালিত ইমামতি ও মোয়াজ্জেমির মসজিদগূলো ছাড়া কোন মসজিদের ইমাম তার ওয়াজে কোরবানির পশুর চামড়া বেচা-কেনা নিয়ে কোন নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেওয়া হতেও বিরত থাকতে দেখা গেছে। নামাজ ও মুনাজাত শেষে কোরবানী দাতারা পশু জবাইয়ের জন্য নেমে পড়তে দেখা গেছে। এছাড়াও ঘরে ঘরে রুটি-পায়েশ ও ঈদের খাবার তৈরি ও বিতরনের কুশলাদি বিনিময়ের তথ্য পাওয়া গেছে। বেলা বাড়ার সাথে সাথেই কোরবানির মাংসের ভাগ বাটোয়ারা শুরু হয়েছে। অদ্য ঈদে দুপুর এর আগে ভোলা জেলার কোরবানির কোন পরিবারেই মাংস রান্না শুরু করতে পারার খবর পাওয়া যায় নাই। বিকাল তিনটার পর পরই সারা ভোলা জেলার সফল কোরবানির পরিবারগুলো মাংস খাওয়া শুরু করতে পেরেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। অনেক নয়া বিবাহের খাদ্য পরিবেশনের অনুষ্ঠানাদি এই কোরবানির মাংস দ্বারাই সেরে ফেলার প্রস্তুতি রয়েছে। তাতে কোরবানির অনুষ্ঠানও হয়েছে, বৈবাহিক অনুষ্ঠানাদিও সম্পন্নের দিকে যাচ্ছে। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ভোলা জেলার কোন কোরবানির পরিবারেই মাংস খাওয়া বাকী আছে বলে খবর পাওয়া যায় নাই। সর্বসাকুল্যে, ভোলা জেলার এই বারের কোরবানির ঈদ সফল। তবে গ্রামে গঞ্জের ঈদে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের পূর্ণ মাত্রা না থাকলে যত্রতত্র কোরবানির পশু জবাই করার কারনে পরিবেশগত আইনকানুন ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা মোটেও রক্ষা করতে দেখা যায় নাই। ঈদ মোবারক। ঈদ মোবারক।