মোঃ আইনুল হক পীরগঞ্জ ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি :
করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে দীর্ঘদিন ধরে স্কুল-কলেজ বন্ধ রয়েছে। ফলে বেশির ভাগ সময় শিক্ষার্থীরা ফেসবুকে শেয়ারের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের গেমস খেলে সময় কাটাচ্ছেন। সরজমিনে গিয়ে জানা গেছে, অনলাইনে স্কুল কলেজের ভিডিও ক্লাস করার প্রয়োজনে অভিভাবকরা কিনে দিয়েছে টার্চ ফোন। শিক্ষার্থীরা ক্লাসের চেয়ে সময় দিচ্ছে মোবাইল ফোনে ভিডিও গেমসে। অভিভাবকরা বলছেন, ভিডিও গেমসে আসক্ত ছেলে-মেয়েদের ভবিষ্যৎ কী হবে?।
পীরগঞ্জ উপজেলার একাধিক সচেতন ব্যক্তি জানান, উঠতি বয়সী শিক্ষার্থী ও তরুণ-তরুণিরা নেশার মতো মোবাইল গেমসের আসক্ত হয়ে পড়ছে। যে সময় তাদের ব্যস্ত থাকার কথা পড়ালেখা ও খেলার মাঠে ক্রীড়া চর্চার মধ্যে সেখানে তারা মোবাইল গেমসে আসক্ত হচ্ছে। ফ্রি-ফায়ার গেমসে অনুরাগী মুরসাল্লিন ও পারভেজ হাসান জানান, বন্ধুদের দেখাদেখি খেলতে গিয়ে সে নিজেই গেমসে আসক্ত হয়ে গেছে। এখন খেলা ছেড়ে দেওয়া তার কাছে অসম্ভব বলে মনে হয়।
পীরগঞ্জ সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান জানায়, ফ্রি-ফায়ার গেমস তার নেশার মতো। মাঝে মধ্যে নেট সমস্যায় এ গেমস খেলতে না পারলে মুঠোফোন ভেঙে ফেলার ইচ্ছা জাগে তার ।
একজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক হবিবর রহমান বলেন, ছেলে এখন বড় হচ্ছে মাইরও দেওয়া যায়না রাগও করা যায়না যে যুগ এসেছে কি করবো আপনারাই বলেন, এই গেমস গুলো বাংলাদেশ থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হোক। পড়াশোনা তেমন না থাকায় গেমসে সারাক্ষণ পাড়ার ছেলেরা ব্যস্ত থাকে।
পীরগঞ্জ উপজেলার সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব ও সৈয়দপুর সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান বলেন, যে গেমসে শিক্ষার্থীরা নেশার মতো আসক্ত হচ্ছে এই গেমস গুলা বন্ধ করে দেওয়া উচিত। দীর্ঘদিন স্কুল কলেজ বন্ধ থাকায় গেমসে আসক্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। অভিবাবকদের এই বিষয়ে ভুমিকা রাখতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি স্থানীয় সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, অনলাইন গেমস ও শিক্ষা নিয়ে ভাবার সময় এসেছে। বর্তমান করোনার সময় স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় ছাত্রছাত্রীরা অনলাইন ও মোবাইল গেমস নিয়ে মেতে উঠছে প্রতিনিয়ত। ছাত্রছাত্রীরা তাদের পড়াশোনার সময়টা এখন বিভিন্ন গেমসের পেছনে ব্যয় করেন, নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান সময়।
স্থানীয় সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, অনলাইন গেমস ও শিক্ষা নিয়ে ভাবার সময় এসেছে। বর্তমান করোনার সময় স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় ছাত্রছাত্রীরা অনলাইন ও মোবাইল গেমস নিয়ে মেতে উঠছে প্রতিনিয়ত। ছাত্রছাত্রীরা তাদের পড়াশোনার সময়টা এখন বিভিন্ন গেমসের পেছনে ব্যয় করেন, নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান সময়।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ কারিগরি প্রশিক্ষন একাডেমি (কেএপি) পীরগঞ্জের পরিচালক নুরুন নবী (রানা) বলেন, অল্প বয়সের ছেলে মেয়েদের হাতে মোবাইল ফোন চলে আসার কারণে তারা তাদের ইচ্ছামতো এসব ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করছে। অনেকেই আবার সারা রাত জেগে গেমসের পেছনে সময় ব্যয় করে। সাম্প্রতিক কালে ছেলেমেয়েদের নজর কাড়ছে ‘ফ্রি ফায়ার’ নামের গেমসটি। এই গেমটি এখন প্রায় মাদকদ্রব্যের মতো ছড়িয়ে পড়েছে দেশের আনাচে-কানাচে।
পীরগঞ্জ সরকারি কলেজ জাতীয় ছাত্র সমাজের সভাপতি ও ছাত্র নেতা সবুজ আলী বলেন, বর্তমানে এই ফ্রি-ফায়ার গেমসে শিক্ষার্থীরা সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকে। শিক্ষর্থীদের জন এটা মারাত্মক ক্ষতি করছে। তবে পরিবারের অভিভাবকদের উচিত এ গেমস থেকে শিক্ষার্থীদের দূরে রাখা। আর যারা এ গেম খেলছে, তারা অনেকেই অনেক সময় মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলা মানুষদের মতো আচরণ করে হঠাৎ করে পাগলের মতো চিৎকার করে উঠে খেলায় ব্যস্ত থাকা মুহূর্তে । কখনো কখনো এমবি শেষ হয়ে গেলে গেম খেলতে না-পারলে তারা পরিবারের সাথেও দুর্ব্যহার করছে । এ গেমে আসক্তদের প্রতিটি পরিবার এ মুহূর্তে অনেক আতঙ্কে বসবাস করছে বলে মনে করছেন তিনি। সম্পতি অনেকেই এই গেমসের সুত্র ধরে ছোট খাটো মারামারির ঘটনার সাথে জড়িয়ে পড়ছে যা একদিন তাদের পরিবারের উপর কাল হয়ে দাড়াবে ।