এস এম খলিলুর রহমান, খুলনা বিভাগীয় ব্যুরো চীফঃ
২৫ জুলাই ২০২১ রবিবার দিবাগত রাত্রে যশোর শহরে ও ঝিকরগাছা উপজেলায় অভিযান চালিয়ে যশোর জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পুলিশের সদস্যরা তাদেরকে আটক করেন। এ সময় হত্যা কাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু, চাইনিজ কুড়াল, মটরসাইকেলসহ ৬ জনকে আটক করেন, যশোর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সদস্যরা।
আটককৃতরা হলেন, যশোর শংকরপুর আশ্রম রোড এলাকার মুরগি ফার্মগেট এলাকার রবিউল ইসলাম সরদারের, ছেলে ইয়াসিন হাসান রানা (২০), ঝিকরগাছা উপজেলার ইস্তা গ্রামের মৃত আব্দুল কাদের বিশ্বাসের, ছেলে হাফিজুর রহমান বিশ্বাস ওরফে ভ্যাবাে (৩০), যশোর পৌরসভা শংকরপুর গোলপাতা মসজিদের সামনে ভাড়াটিয়া আমিন মোড়লের ছেলে জয় (১৯)। সে স্থায়ী বাসিন্দা ঝিকরগাছা উপজেলার জয় কৃষ্ণপুর গ্রামের আমিন মোড়লের ছেলে, যশোর শংকরপুর এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের, ছেলে মােঃ আলী (২০), একই এলাকার মিন্টু শেখের, ছেলে বিল্লাল হােসেন ওরফে মৃদুল (২০), ও শংকরপুর এলাকার মৃত্যু কটার ছেলে মানিক (২৬)। সোমবার দুপুরে যশোর গোয়েন্দা পুলিশের দপ্তরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
যশোর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ডিএসবিও ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ঈদের পরদিন শাওন ওরফে টুনি হত্যা কাণ্ডটি চাঞ্চল্যকর হওয়ায় যশোরের পুলিশ সুপার হত্যা মামলাটির তদন্তভার দেন যশোর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অফিসার ইনচার্জ রুপম কুমার সরকারের কাছে। এর আগে নিহত শাওন ওরফে টুনির বাবা ৭ থেকে ৮ জনকে আসামী করে যশোর কোতয়ালি মডেল থানায় ১টি হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত্যা কাণ্ডের পরের দিনই ৩ জনকে আটক করা হয়। এরপর গতকাল রাতে যশোর গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পুলিশের সদস্যরা যশোর শহরের বিভিন্ন স্থানে ও ঝিকরগাছা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আরোও ৩ জন আসামিকে আটক করা হয়।
উল্লেখ্য, ২২ শে জুলাই ঈদের পরের দিন রাত ১০ টা ৩০ মিনিটের দিকে যশোর সদর থানার শংকরপুর জুমাদ্দারপাড়া ছোটনের মোড়ে কমিউনিটি পুলিশের অফিসে ঢুকে সন্ত্রাসীরা আব্দুল হালিম শেখের, ছােট ছেলে চাঁদাবাজ সন্ত্রাসী শাওন ওরফে টুনিকে, নির্মম ভাবে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে স্থানীয়রা তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে দেখে মৃত ঘোষণা করেন।
যশোর জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পুলিশের ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ রুপণ কুমার সরকার বলেন, মামলাটির স্পর্শকতার হওয়ায় যশোরের পুলিশ সুপার মামলাটির দায়িত্ব দেন, যশোর গোয়েন্দা পুলিশের নিকটে। এরপর পুলিশ সুপারের দিক-নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি)ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও ক্রাইম) এবং যশোর “ক” সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হােসাইনের, তত্ত্বাবধানে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক রােকিবুজ্জামান, এবং আমি রুপন কুমার সরকার, পিপিএম এর নেতৃত্বে এসআই মফিজুল ইসলাম, পিপিএম ও এসআই শামীম হােসেনের, সমন্বয়ে ১টি চৌকশ (ডিবি) পুলিশের টিম ও থানা পুলিশ যৌথ ভাবে ২৫ জুলাই দিবাগত রাত ও ২৬ জুলাই রাত ১০ টা হতে ভাের ৫ টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত। যশোর কোতয়ালী মডেল থানার এলাকায় ও ঝিকরগাছা থানার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরোও জানান, হত্যা মামলার আসামিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, নিহত শাওন ওরফে টুনি এবং হত্যাকারীরা পরস্পর সহযােগী চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসী। তাদের মধ্যে অন্তঃকলহ ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঘটনার দিন ডেকে নিয়ে ধারালাে অস্ত্র দিয়ে, শংকরপুর কমিউনিটি পুলিশিং অফিসে ঢুকে তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে। হত্যাকারীরা দীর্ঘদিন ধরে ১টি রাজনৈতিক আশ্রয় আছে, এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যাবলী করে আসছিল। ইতিমধ্যে রাজনৈতিক নেতাদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। তারা এ হত্যা কাণ্ডের সাথে জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি আমাদের জানিয়েছেন।