নূরুল হক, মণিরামপুর প্রতিনিধি:
মণিরামপুরে এক লিজ গ্রহিতার মাছের খামার দখলের পর ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বালু উত্তোলনের ফলে খামারের আশপাশের বিভিন্ন ফসলি জমি ভেঙ্গে খামারের মধ্যে বিলীন হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। ফলে অবৈধ দখলদার ও বালু খেকোদের হাত থেকে ফসলি জমি রক্ষা করতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ করা হয়েছে।
জানাযায়, উপজেলার হরিহরনগর ইউনিয়ন পরিষদের অবসরপ্রাপ্ত সচিব বজলুর রহমানের কাছ থেকে ২০১৯ সালে মদনপুর মাঠে সাড়ে ১০বিঘার একটি পুকুর লিজ নেন সিরাজুল ইসলাম নামে এক খামারী। প্রতিবছর লিজ বাবদ এক লাখ ২৬ হাজার টাকায় চুক্তি করে সিরাজুল ইসলাম সেই থেকে রুই, কাতলা, চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করে আসছিলেন। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে মেয়াদ শেষ না হওয়ার আগেই বজলুর রহমানের যোগসাজসে এলাকার আবদুল আজিজ, ইব্রাহিম হোসেন এবং শিমুল হাসান তাদের লোকজন নিয়ে সম্প্রতি ওই খামারটি দখল করে নেন। সিরাজুল ইসলামের অভিযোগ খামারটি দখলের পর লক্ষাধিক টাকার মাছ লুট করেও ক্ষ্যান্ত হয়নি তারা। উপরোন্ত খামারে মধ্যে বড় ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে রাত-দিন বালু উত্তোলন করে এলাকার বিভিন্ন ইটভাটা ও রাস্তা নির্মানকারীদের কাছে বিক্রি করছেন। এ দিকে বালু উত্তোলন করায় আশপাশের ফসলি জমির পাড় ভেঙ্গে খামারে বিলীন হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। ফলে ফসলি জমি রক্ষা করতে কৃষকদের পক্ষ থেকে সিরাজুল ইসলাম ৫আগষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এ ব্যাপারে মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিন গিয়ে মৎস্য খামারে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলনের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। প্রতিনিয়ত বালু উত্তোলন করায় খামারের পশ্চিম পাশে আবদুল মোমিনের পেঁপে ক্ষেতের একটি অংশ ইতিমধ্যে ভেঙ্গে পড়েছে। একইভাবে ভেঙ্গে পড়েছে উত্তর পাশের আকবর আলীর ও দক্ষিনপাশে আক্কাস আলীর ধান ক্ষেত। এ সময় কথা হয় অভিযুক্ত আবদুল আজিজ, ইব্রাহিম হোসেন ও শিমুল হাসানের সাথে। মাছের খামার দখল করার অভিযোগ অস্বীকার করে তারা জানান, ইতিমধ্যে মাছের খামারটির প্রকৃত মালিক বজলুর রহমানের কাছ থেকে তারা কয়েকজন নতুন করে লিজ নিয়ে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করছেন।
এ ব্যাপারে বজলুর রহমান জানান, সিরাজুল ইসলাম তার কাছ থেকে খামারটি প্রতিবছর এক লাখ ২৬ হাজার টাকায় চুক্তি করে লিজ নিলেও অদ্যাবধি কোন টাকা পরিশোধ করেননি। ফলে উপায়ন্ত না পেয়ে তিনি অন্য ব্যক্তিদের কাছে নতুন করে লিজ দিয়েছেন। তবে প্রথম লিজ গ্রহীতা সিরাজুল ইসলাম জানান, প্রতিবছর বজলুর রহমানকে লিজ বাবদ নির্ধারিত টাকা পরিশোধ করেই তিনি মাছ চাষ করে আসছিলেন। অন্যদিকে বর্তমান খামারটির দখলদার আবদুল আজিজ, ইব্রাহিম হোসেন ও শিমুল হাসান বালু উত্তোলনের অভিযোগ স্বীকার করে জানান, প্রশাসন নিষেধাজ্ঞা জারি করলে বালু উত্তোলন বন্ধ করে দিবেন। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ জাকির হাসান জানান, অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে দ্রæত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।