রবিবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:১৮ অপরাহ্ন [gtranslate]
Headline
Headline
দেওয়ানগঞ্জে জিলবাংলা চিনিকলে আখ মাড়াইয়ের শুভ উদ্বোধন সভাপতি রাজু আহমেদ, সম্পাদক কায়েম সিংড়া মডেল প্রেসক্লাবের ত্রি-বার্ষিক কমিটি গঠন গাজীপুর সদরে জামায়াতে ইসলামীর সূধী সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত অসুস্থ বৃদ্ধকে জঙ্গলে ফেলে যায় সন্তানরা, ৩ দিন পর উদ্ধার করে দায়িত্ব নিলেন ওসি হালিম ইসলামপুরে বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত রামপালে বিএনপি’র কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত ডিউটি না করেই বেতন-ভাতা উত্তোলন সেই নার্সের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গৃহবধূ পীপা হত্যা মামলায় স্বামী আলমের জামিনে মুক্ত ফুলের শুভেচ্ছা ওয়ার্ড যুবদল নেতা মামুন শিকদার দল থেকে বহিষ্কার পটিয়ায় হেফাজতে ইসলামের নব-গঠিত  কমিটির পরিচিত সভা অনুষ্ঠিত  নীলফামারীর সৈয়দপুরে পৃথক দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় শিশু সহ নিহত ২ গাজীপুরের বাঘের বাজারে খাজনা আদায়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ শিবগঞ্জে ইউপি সদস্য রাইহানের বিরুদ্ধে কবর স্থানের নামে সরকারি বরাদ্দের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ মাদারীপুরে মসজিদ নির্মাণের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা, নারীদের স্থানীয় সম্পদ ব্যবহার করে এলাকার উন্নয়ন ভিত্তিক প্রশিক্ষণ নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের গাড়ির ধাক্কায় নিহত ১ কামু বাহিনীর প্রধান ‘কামু’ গ্রেফতার ইসলামপুর খাদ্য গুদামে ধান চাল সংগ্রহ উদ্বোধন গাজীপুরে ছাত্রদল নেতার মাদকের সাথে সংশ্লিষ্টতা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল গাজীপুরে বনের জমিতে উচ্ছেদ অভিযানের সময় হামলার ঘটনায় থানায় মামলা
বিষয়: হিমালয় ভ্রমণ। ভ্রমণের নাম :ফুলেল।
/ ২১১ Time View
Update : রবিবার, ১৫ আগস্ট, ২০২১, ১১:৪৮ পূর্বাহ্ন

লেখা:দেবপ্রিয় প্রামানিক:
———————————-
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্পর্শ নেই এমন কিছু বিষয় বাঙালীর জীবনে নেই, তাই ভ্রমণ কাহিনী লিখতে বসেও তাঁর শরণাপন্ন।
‘হিমালয়’ কবিতা র দুটো লাইন মনকে ছুঁয়ে যায় সবসময় যতবার হিমালয়ে আসি –
‘তোমার বিশাল ক্রোড়ে লভিতে বিশ্রাম-সুখ; ক্ষুদ্র নর আমি এই আসিয়াছি ছুটিয়া।’
রূপ, রস, বর্ণ, গন্ধে হিমালয় বৈচিত্র ময়। গন্ধের কথা শুনে অবাক হচ্ছেন নিশ্চয়ই, আমি আজ যে ভ্রমনের কথা উল্লেখ করতে চলেছি সেখানে চোখ ধাঁধানো রূপ, প্রাকৃতিক বৈচিত্র সব আছে, সাথে প্রকৃতি মা উজার সেখানে করেছেন ফুলেল ঘ্রাণ।

ভারতবর্ষে ঠিক এইরকম জায়গা দুটো আছে বলে আমার মনে হয় না, কারণ প্রাকৃতিক ভাবে ভারতবর্ষের অনেক জায়গাতেই ফুল হয়তো ফোটে কিন্তু পুরো এলাকায় বিভিন্ন রকম গন্ধের বৈচিত্র শুধু এখানেই।
জায়গাটার নাম ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার বা ফুল কি ঘাঁটি বা ফুলের উপত্যকা। জুলাই মাসের শেষ দিক থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত প্রকৃতি নিজের প্রায় সমস্ত রং ও আদিম এক প্রাকৃতিক সুগন্ধ দিয়ে সাজিয়ে তোলে ঘাংঘারিয়া থেকে বাঁদিকের তিন কিলোমিটার খাড়ায়ের পরবর্তী উপত্যকাকে।
১৯৩১ সালে Frank S. Smythe, Eric Shipton and R.L. Holdsworth, all তিনজন ব্রিটিশ পর্বতারোহী পথ হারান মাউন্ট কামেট অভিযানের পর এবং তাঁরাই পৃথিবীর এই সুন্দরতম অংশের নৈসর্গিক রূপের হয়তো প্রথম দর্শক যাঁরা এর প্রচার করেন। তাঁদেরই দেওয়া নাম “Valley of Flowers.”
ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার ট্রেকিং করলে এর রূপ ও গন্ধকে উপভোগ করা যায় খুব ভালো করে। তবে বাস্কেট করেও অনেকে যান ফুলের এই উপত্যকায়।
উত্তরাখন্ডের উত্তর চামোলী জেলার ছোট্ট এক জনপদ ঘাংঘারিয়া। এই ঘাংঘারিয়াতে কম করে তিন রাত্রি যাপন করলেই আর দুদিনের ওঠা নামা মিলিয়ে প্রায় আঠাশ থেকে ত্রিশ কিলোমিটার হাঁটলেই হেমকুন্ড সাহিব এবং ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার দর্শন করা যায়। তবে হেমকুন্ড সাহিবের রাস্তায় ঘোড়া ও ডুলি চলাচল করে। কিন্তু ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার ট্রেকিং বা বাস্কেটে উঠে যাওয়া ছাড়া সম্ভব নয়।
ভারতবর্ষের যে কোনো জায়গা থেকে আকাশ পথে দেরাদুন বা স্থল পথে হরিদ্বার বা দেরাদুন এসে গাড়িতে (বাসও পাওয়া যায়) গোবিন্দঘাট। যদিও দূরত্বের কারণে বা থাকার ভালো ব্যবস্থার জন্য অনেকেই পিপলকোটি বা জোশীমঠে থেকে যেতেও পারেন। পরদিন ভোরে গাড়িতে সোজা গোবিন্দঘাট। অনেকেই এখান থেকেই ট্রেক শুরু করেন, এখানেই দেওয়া হয় ঘাংঘারিয়া যাওয়ার ছাড়পত্র আইডেন্টিটি ভেরিফিকেশনের পর। আধার কার্ড থাকলে খুব সুবিধা হবে। এখান থেকে চার কিলোমিটার দূরে পুলনা, এই চার কিলোমিটার গাড়িতে গিয়ে পুলনা থেকে ঘাংঘারিয়া ট্রেক করলে সময় ও শরীরে এনার্জি দুই বাঁচে।
পুলনা থেকে ঘোড়া ও ডুলি সওয়ারি নিয়ে যায় ঘাংঘারিয়া। চোদ্দ কিলোমিটার মতো হাঁটতে হবে পুলনা থেকে ঘাংঘারিয়া পৌঁছতে। যদিও প্রথম পাঁচ কিলোমিটার মতো হালকা চড়াই উৎড়াই এর পর এক পাহাড়ি খরস্রোতা নদী পেরতো হবে যার নাম লক্ষণগঙ্গা। এরপর কিন্তু বাকিটা প্রায় পুরোটাই চড়াই।
ঘাংঘারিয়া পৌঁছে সেইদিনটা বিশ্রাম। পরদিন সকালে বেছেনিন হেমকুন্ড সাহিবের পথ অথবা ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ারের পথ। আর তার পরদিন যেটা বাকি থেকে যাবে সেই পথ। আবার ঘাংঘারিয়া থেকে ফেরার দিন ভোর বেলা বেরিয়ে নামতে হবে চোদ্দ কিলোমিটার পথ। গোবিন্দঘাট এসে সেদিন বদ্রীও যাওয়া যেতে পারে।
হেমকুন্ড সাহিবের পথে ব্রহ্মকমল ফোটে মোটামুটি আগষ্ট মাসের শুরু থেকেই। তবে বেশী বৃষ্টি হলে জুলাই শেষের দিকেও ব্রহ্মকমলের দেখা পাওয়া যাবে।

কতগুলি সাহায্যকারী তথ্য :
—————————————-
⚫এই ট্রেক যেহেতু বর্ষায় হয় তাই বৃষ্টির মধ্যে পরতে হবেই ধরে নিয়েই তেমন পোশাক জুতো ও রেনকোট নিতে হবে।⚫ঘাংঘারিয়া তে BSNL মোবাইল পরিষেবা পাওয়া যায়। হয়তো আগামী বছর থেকে Jio পরিসেবা পাওয়া যাবে ।
⚫ঘাংঘারিয়াতে বিভিন্ন দামের ও মানের থাকার ও খাবার ব্যবস্থা আছে। গুরুদ্বোয়ারাতে বিনামূল্যে থাকার ও খাবার ব্যবস্থা আছে।
⚫ঘাংঘারিয়া তে মোটামুটি প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও অষুধ পাওয়া যায়।
⚫ঘাংঘারিয়া থেকে হেমকুন্ড সাহিবের পথে বেশ কিছু চা ও জলখাবারের দোকান আছে। সেখানে পাবেন আলুর পরোটা,ম্যাগী, চা, কফি ইত্যাদি।
⚫ঘাংঘারিয়া থেকে ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ারের পথে কোনও দোকান পাবেন না। খাবার প্যাক করে নিয়ে যেতে হবে।
⚫ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার কিন্তু ‘নো প্লাস্টিক জোন’, কাজেই কোথায় প্লাস্টিক ফেলবেন না। প্রকৃতিতে ভালোবাসলে প্রকৃতি বঞ্চিত করে না।
⚫হেমকুন্ড সাহিবে বিনামূল্যে খিচুড়ি ও চা যতবার ইচ্ছা খাওয়া যায়। এই খিচুড়ি ও চা না খেলে বিশেষ এক স্বাদ মিস্ করবেন।
⚫পুলনা থেকে ঘাংঘারিয়া যাওয়ার পথে প্রচুর চা ও জলখাবারের দোকান পাওয়া যায়।
⚫হেমকুন্ড সাহিবের উচ্চতা প্রায় ৪৬৩৩ মিটার। হেমকুন্ড সাহিবে অনেক সময় উচ্চতাজনিত সমস্যা হতে পারে। কাছে কর্পূর রাখলে এই সমস্যা থেকে আরাম পাবেন।
⚫হেমকুন্ড সাহিবের পথে ‘পে এন্ড ইউজ’ বায়ো টয়লেট পাওয়া যায়।
⚫ব্রহ্মকমল হেমকুন্ড সাহিব যাওয়ার পথে ফোটে ।ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ারের দিকে পাবেন না।

আমার নিজের ভ্রমণের অভিজ্ঞতা সকলের সঙ্গে ভাগ করলাম কিন্তু যেটা সকলের সঙ্গে ভাগ করতে পারছি না সেটা ফুলের উপত্যকায় পাওয়া এক প্রাকৃতিক গন্ধ, যা মন ও শরীরকে এক নৈসর্গিক অনুভূতি প্রদান করেছিল। আশাকরি সুস্থ পৃথিবীতে আবার আমরা হিমালয়ের ক্রোড়ে ক্ষণিকের বিশ্রাম পাবো।

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Our Like Page
December 2024
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930