হাকিকুল ইসলাম খোকন ,যুক্তরাষ্ট্র সিনিয়র প্রতিনিধিঃ
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করতে যাচ্ছেন দেশটির সাবেক উপ প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল সাবরি ইয়াকুবই। চলতি সপ্তাহের শুরুতে ভেঙে যাওয়া একই জোট থেকে সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের পর তিনি পরবর্তী সরকার গঠনে প্রস্তুত বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।
গত সোমবার মহিউদ্দিন ইয়াসিন মালয় প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন এবং স্বীকার করেছেন যে তিনি তার জোট থেকে সমর্থন হারিয়েছেন।
দ্য স্টার এবং অন্যান্য মিডিয়ার খবরে বলা হয়, ইসমাইল সাবরি ২২২ আসনের পার্লামেন্টের ১১৪ জন সাংসদের সমর্থন নিয়ে সংখ্যা গরিষ্ঠতা অর্জন করেছেন।
সাংবিধানিক রাজা বাদশাহ আল-সুলতান আবদুল্লাহ চান, যে কোনো নতুন প্রধানমন্ত্রীকে পার্লামেন্টের আস্থা ভোটের মুখোমুখি করতে হবে। যাতে তার সমর্থন সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়।
ইউএমএনওর আইনপ্রণেতা আহমেদ মাসলান টুইটারে বলেছেন, ইসমাইল সাবরিকে সমর্থনকারী আইনপ্রণেতাদের সমর্থন যাচাইয়ের জন্য বৃহস্পতিবার বাদশাহর সঙ্গে দেখা করতে বলা হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, মুহিউদ্দিনের জোটে থাকা একই রাজনৈতিক দলের সাংসদরাও রয়েছেন।
বিরোধী আইনপ্রণেতা ওং কিয়ান মিং টুইটারে বলেছেন, বিরোধী দল, যা মূলত আনোয়ার ইব্রাহিমকে সমর্থন করে। তাদের প্রাসাদে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। রাজা শুক্রবার দেশের মালয় শাসকদের সাথে সাক্ষাতের কথা রয়েছে। তার পরেই নতুন প্রধানমন্ত্রীর বিষয়ে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হতে পারে।
২০২০ সালে মালয়েশিয়ার পার্লামেন্ট দেওয়ান রাকাইয়েতের সদস্যদের ভোটে জিতে দেশের প্রধানমন্ত্রীর পদে আসীন হয়েছিলেন মুহিউদ্দিন ইয়াসিন। তবে তার পক্ষে ও বিপক্ষে পড়া ভোটের ব্যবধান অল্প থাকায় নিজের পদ ধরে রাখতে সারাক্ষণ চাপে ছিলেন তিনি।
সম্প্রতি সেই চাপ আরও বেড়ে যায়। তার দলের কয়েকজন আইনপ্রণেতা বর্তমান ক্ষমতাসীন জোট সরকারের অন্যতম শরিক ও মালয়েশিয়ার বৃহত্তম রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড মালয়স ন্যাশনাল অরগানাইজেশনে যোগ দেয়।
এ ছাড়া করোনা মহামারি মোকাবিলায় ব্যর্থতা, স্বেচ্ছাচারিতা, মহামারি পরিস্থিতিতে অর্থনীতি পুনর্গঠনে সঠিক নির্দেশনা দিতে না পারা এবং অযৌক্তিকভাবে রাজাকে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণার পরামর্শ দেওয়ার অভিযোগ মুহিউদ্দিন ইয়াসিনের বিরুদ্ধে রয়েছে।
গত জুলাইয়ের শেষে তার পদত্যাগের দাবিতে মালয়েশিয়ায় বিক্ষোভ শুরু হয়, এর জেরে গত ৪ আগস্ট এক টেলিভিশন ভাষণে মুহিউদ্দিন ইয়াসিন ঘোষণা করেন, পার্লামেন্টের সদস্যরা তাকে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মেনে নিতে প্রস্তুত কি না, যাচাই করতে আগামী সেপ্টেম্বরে দেওয়ান রাকাইতে আস্থাভোট চান তিনি। আগামী সেপ্টেম্বরে পার্লামেন্টে আস্থা ভোটের কথা থাকলেও এর আগেই পদত্যাগ করলেন মুহিউদ্দিন ইয়াসিন।