

সাইফুল্লাহ নাসির,আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধিঃ
বরগুনার আমতলীতে আমড়াগাছিয়া বাজার সংলগ্ন চাওড়া দোন নদীর ওপর নির্মিত আয়রণ সেতুটি ভেঙ্গে যাওয়ার এক বছর পরেও তা মেরামত করা হয়নি। ভেঙ্গে যাওয়ার পরে স্থাণীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমে নিজেদের অর্থ ব্যয় করে আয়রণ সেতুর ভাঙ্গা অংশে একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ওই সেতু পার হয়ে তিনটি ইউনিয়নের অর্ধলক্ষাধিক মানুষ চলাচল করতো। আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে সেতুর উপর দেয়া ওই বাঁশের সাঁকোটি ভেঙ্গে নদীতে পড়ে যায়। এতে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে ওই তিন ইউনিয়নের ভূক্তভোগী মানুষ।
স্থাণীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৬ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ চাওড়া দোন নদীর আমড়াগাছিয়া বাজারের সংলগ্ন স্থানে ওই আয়রণ সেতুটি নির্মাণ করেন। নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে নির্মাণ করায় সেতুটি এমনিতেই নড়বড়ে ছিল। ২০১৬ সালে ওই সেতুটির মাঝখানের অংশ ভেঙ্গে নদীতে পড়ে যায়। এতে উপজেলার চাওড়া, কুকুয়া ও গুলিশাখালী ইউনিয়নের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিছিন্ন হয়ে পড়ে। তাৎক্ষনিক স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ ওই সেতুর ভাঙ্গা অংশ মেরামত করে দেয়। মেরামত করার পরে ওই সেতু দিয়ে ভাড়ী যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করে দেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ। কিন্তু ওই নিষেধ উপেক্ষা করে ট্রাক ও ট্রলির মালিকরা এই সেতু দিয়ে ইট বালু ও অন্যান্য মালামাল বোঝাই করে চলাচল করতে থাকে। এরপর ২০২০ সালের ১০ জুন ইট বোঝাই করে একটি ট্রলি পারাপারের সময় ট্রলিটিসহ সেতুর মাঝের অংশ ভেঙ্গে নদীতে পড়ে যায়। এতে দুর্ভোগে পরে আমড়াগাছিয়া, সাহেববাড়ী, গোজখালী, গুলিশাখালী, কলাগাছিয়া এলাকাসহ তিনটি ইউনিয়নের প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষ এবং কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। বন্ধ হয়ে যায় ওই এলাকার কৃষকদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য আনা নেওয়া ও উপজেলা শহরের সাথে সড়কপথে মানুষের যাতায়াত ব্যবস্থা।
সরেজমিনে আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, গত এক বছর পূর্বে স্থাণীয়রা ওই ভেঙ্গে যাওয়া সেতুটির মধ্যের অংশে একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে জীবনে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতো। যা আজ সকালে ভেঙ্গে নদীতে পরে গেছে। ওই এলাকার মানুষদের এখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় পার হতে দেখা গেছে।
কথা হয় স্থানীয় সজিব, শামীম ও নান্নুর সাথে। তারা বলেন, চাওড়া দোন নদীর ওপরে আমড়াগাছিয়া বাজার সংলগ্ন এলাকায় নির্মিত ওই আয়রণ সেতুটি পার হয়ে উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের মানুষ ও বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করতো। এক বছর পূর্বে সেতুটি ভেঙ্গে যাওয়ার পরে স্থাণীয়দের উদ্যোগে মানুষের চলাচলের জন্য ওই ভাঙ্গা সেতুর উপড়ে একটি বাঁশের সাকো নির্মাণ করা হয়। যা দিয়ে মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতো। আজ ওই সাকোটি ভেঙ্গে যাওয়ায় শিক্ষার্থীসহ প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষের যাতায়াতে ভোগান্তিতে পোহাতে হচ্ছে।
গুলিশাখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাড. এইচ এম মনিরুল ইসলাম মনি মুঠোফোনে বলেন, ভাঙ্গা সেতুর উপড় নির্মিত বাঁশের সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনটি ইউনিয়নের অর্ধলক্ষাধিক মানুষ চলাচল করতো। আজ সেই সাকোটিও ভেঙ্গে যাওয়ায় মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছে। দ্রæত এখানে একটি গার্ডার ব্রীজ নির্মাণের জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছে অনুরোধ করেন।
উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন মুঠোফোনে বলেন, ওইখানে গার্ডার ব্রীজ নির্মাণের প্রস্তাব স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পাওয়া গেলে গার্ডার ব্রীজ নির্মাণ করা হবে।