মোঃ এনামুল হক গাজীপুরঃ
গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানার কপাটিয়াপাড়া এলাকার বহুল আলোচিত অজ্ঞাত মহিলা (২০) হত্যা মামলার রহস্য
উদ্ঘাটন, আসামী গ্রেফতার করলো পিবিআই গাজীপুর।
মামলা ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত আসামী মোঃ সুমন মিয়া (৩৬), পিতা- মোঃ বাদশা মিয়া, সাং-কপাটিয়াপাড়া,
থানা- শ্রীপুর, জেলা-গাজীপুর’কে ইং ২৫ শে আগষ্ট ২০২১ ভোর রাত ০৩.৪০ ঘটিকার সময় গাজীপুর জেলার শ্রীপুর
থানাধীন কপাটিয়াপাড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
অত্র মামলাটি একটি লোমহর্ষক হত্যা মামলা। গত ইং ২১/০৬/২০১৯ তারিখ সকাল অনুমান ০৯.১০ ঘটিকার সময় শ্রীপুর
থানা পুলিশ শ্রীপুর থানাধীন পশ্চিম কপাটিয়া সাকিনস্থ মোঃ রফিকুল ইসলামের পুকুরে অজ্ঞাতনামা মহিলা (২০)’র
গলাকাটা লাশ পানিতে ভাসমান অবস্থায় পেয়ে উদ্ধার করে। মৃতার পড়নে একটি খয়েরী রংয়ের জামা, যাহা এ্যাম্বেডারী
নকশী করা ও লাল রংয়ের পায়জামা পরিহিত ছিল। এ সংক্রান্তে শ্রীপুর থানার এস আই মোঃ নাজমুল সাকীব বাদী হয়ে
অজ্ঞাতনামা আসামীর বিরুদ্ধে শ্রীপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন, যার নং ৪৪ তারিখ-২১/০৬/২০১৯ ইং, ধারা-
৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড।
মামলাটি শ্রীপুর থানা পুলিশ প্রায় ৩ মাসের অধিক তদন্ত করে এবং তদন্তাধীন অবস্থায় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ঢাকার
মাধ্যমে পিবিআই গাজীপুর জেলায় পরবতর্ী তদন্তের জন্য প্রেরণ করে।
ডিআইজি পিবিআই জনাব বনজ কুমার মজুমদার, বিপিএম (বার), পিপিএম এর সঠিক তত্ত্বাবধান ও দিক নির্দেশনায়
পিবিআই গাজীপুর ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার, জনাব মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এর সার্বিক সহযোগীতায় মামলাটির
তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক জনাব মোঃ আব্দুল কাদের গত ২০/০২/২০২১ তারিখ হতে মামলাটি তদন্ত শুরু
করেন।
আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, সে পেশায় অটোরিক্সা চালক , তার স্ত্রী জর্ডানে থাকে। তার স্ত্রীর দেয়া টাকা দিয়ে
সে একটা ভিভো মোবাইল সেট কিনে। সেই মোবাইল তার এলাকার হৃদয়, পিতা-সফিকুল ইসলাম, তার কাছ থেকে
চেয়ে নিয়ে আত্মসাৎ করে। এই বিষয় নিয়া হৃদয়ের প্রতি তার ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। ঘটনার দিন ইং ২১/০৬/২০১৯ তারিখ
রাত অনুমান ০১.০০ ঘটিকার দিকে আসামী সুমন শ্রীপুর থানার নয়নপুর বাজারে গিয়ে ভাসমান পতিতা ‘‘রোজিনা’’নামধারী পরিচয়ের একটি মেয়েকে ১০০০/- (এক হাজার) টাকার বিনিময়ে শারীরিক সম্পর্কের জন্য কন্ট্রাক করে একটি
অটোরিক্সা ভাড়া করে কপাটিয়া পাড়ায় হৃদয় এর বাড়ীর পাশে বঁাশ বাগান ও জঙ্গলে নিয়ে আসে। তারপরে ঐ মেয়ের
সাথে দুই দফায় শারীরিক সম্পর্ক করে। রোজিনা তার কাছে টাকা চাইলে সে রোজিনাকে বাথরুমের কথা বলে তার বাড়ী
থেকে বটি নিয়ে আসে এবং রোজিনাকে মাটিতে শুয়াইয়া রোজিনার নাক মুখে চাপ দিয়ে ধরে বটি দিয়ে জবাই করে।
হৃদয়কে ফঁাসানোর জন্য আসামী সুমন রোজিনার লাশ পা ধরে টেনে হৃদয়দের পুকরে ফেলে দেয়। তারপরে সে বটি সাথে
নিয়া সেখান থেকে তার বাড়ীতে চলে আসে। পরের দিন সেই বটি ভেঙ্গে ফেলে এবং এলাকায় ফেরিয়ালা আসলে তার
কাছে বাইশ টাকা কেজি ধরে বিক্রি করে দেয়।
এই বিষয়ে পিবিআই গাজীপুর জেলার পুলিশ সুপার, জনাব মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বলেন, আসামীর স্ত্রী বিদেশে
থাকায় সে প্রায়ই খারাপ মেয়েদের নিয়ে এলাকায় আসতো এবং ফুর্তি করতো। মোবাইল সেট নিয়ে তার প্রতিবেশী
হৃদয়ের প্রতি তার ক্ষোভ ছিল। ঘটনার রাতে সে নয়নপৃুর বাজার বাস ষ্ট্যান্ড হতে ভ্রাম্যমান পতিতা বলে কথিত জনৈক
রোজিনা নামক মেয়েকে ১০০০/- টাকার বিনময়ে শারিরীক সম্পর্কের জন্য হৃদয়ের বাড়ী সংলগ্ন বাঁশ বাগান ও জঙ্গলস্থ
ঘটনাস্থলে নিয়ে আসে। কথিত রোজিনার সাথে সে দু’বার শারিরীক সম্পর্ক করে। রোজিনা তার কাছে টাকা চাইলে সে
রোজিনাকে বাথরুমের কথা বলে তার বাড়ী থেকে বটি নিয়ে আসে এবং রোজিনাকে মাটিতে শুয়াইয়া রোজিনার নাক মুখে
চাপ দিয়ে ধরে বটি দিয়ে জবাই করে। হৃদয়কে ফঁাসানোর জন্য আসামী সুমন রোজিনার লাশ পা ধরে টেনে হৃদয়দের
পুকুরে ফেলে দেয়।
আসামী মোঃ সুমন মিয়া (৩৬)’কে ইং ২৫/০৮/২০২১ তারিখ বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করলে সে নিজেকে ঘটনার সাথে
জড়িয়ে সেচ্ছায় বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃকাঃবিঃ এর ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।