

মোঃ বাবলু মল্লিক , কালিয়া (নড়াইল) প্রতিনিধিঃ
নড়াইলের নড়াগাতী থানার বাগুডাঙ্গা গ্রামে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান প্রবাসী হুমায়ুন কবির (৪১) চিহ্নিত সুদখোর একই গ্রামের ছাকেন মোল্যার ছেলে আকি মল্যার (৪৫) দেওয়া হুমকিতে পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী হুমায়ুন কবির ২ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) সুদখোরের হাত থেকে জমি ও নিজ পরিবারকে রক্ষা করার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি আবেদন দাখিল করেছেন। হুমায়ুন কবির ওই গ্রামের মোঞ্জেল শেখের ছেলে এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ সামসুল হকের ভাইপো।
আবেদন ও ভুক্তভোগী সুত্রে জানা যায়, প্রায় দেড় বছর পূর্বে হুমায়ুন কবিরের বড় ভাই নজরুল শেখের ষ্ট্রোক জনিত কারণে মৃত্যু হলে সুদখোর আকি মোল্যা জানায় ৩ বছর পূর্বে নজরুল শেখ ফাঁকা ষ্ট্যাম্প মূলে তার কাছ থেকে সুদ বিনিময় মূল্যে ৬০ হাজার টাকা ধার নেন এবং ওই টাকা সুদসহ দাবী করেন। তখন প্রবাসে থাকা হুমায়ুন কবির ফোনের মাধ্যমে বিষয়টি জেনে ভাইয়ের ঋণ নিজে পরিশোধের ভার নেন এবং করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত সময় চান। ৬ মাস পরে হুমায়ুন কবির সিঙ্গাপুর থেকে বাড়ী আসেন এবং আকি মোল্যার কাছে তার ভাইয়ের টাকা নেওয়ার প্রমান স্বরূপ ষ্ট্যাম্প দেখতে চাইলে তিনি দেখাতে অস্বীকৃতি জানান। আকি মোল্যারা প্রভাবশালী হওয়ায় হুমায়ুন কবির আপন ভাইয়ের মৃত্যু পূর্ব ঋণ নিয়ে বিতর্কে না গিয়ে সময় প্রার্থনা সাপেক্ষে পরিশোধের প্রস্তাব রেখে করোনা কালীন সময়ে কষ্টে যোগাড় করে ১ লা সেপ্টেম্বর আকি মোল্যাকে ১৫ হাজার টাকা প্রদান করেন। কিন্তু আকি মোল্যা এখনই তাকে সম্পূর্ণ টাকা না দিলে জমি দখলসহ শারীরিক নির্যাতনের হুমকি দেন। তারই প্রেক্ষিতে সুদখোরের অত্যাচার থেকে রক্ষা পেতে ইউএনও কালিয়ার সাহায্য কামনা করেছে মুক্তিযোদ্ধা পরিবার। এছাড়া নজরুল শেখের ষ্ট্রোক জনিত মৃত্যুর কারণ হিসাবে আকি মোল্যার অত্যাচারই দ্বায়ী বলে আবেদনে উল্লেখ করেছেন ভূক্তভোগী হুমায়ুন কবির। তিনি আরো জানান, আকি মোল্যার সুদে কারবারীর খপ্পরে পড়ে এলাকার অনেক মানুষ দেউলিয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আকি মোল্যা সুদে টাকা দেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ৩ বছর পূর্বে হুমায়ুন কবির বিদেশে থাকাকালীন সমস্যায় পড়লে তার মুক্তিযোদ্ধা চাচা সামসু শেখ ও বড় ভাই নজরুল শেখ হুমায়ুনের প্রয়োজনে পরে ষ্ট্যাম্প দিবে বলে সাসসু শেখ নিজ হাতে ৬৫ হাজার টাকা নেয়। কিন্তু আজও ষ্ট্যাম্প দেয়নি। হুমায়ুন বাড়ী এসে ওই টাকা না দেওয়ায় কয়েকবার এলাকায় শালিসও হয়েছে। পরে ১ লা সেপ্টেম্বর আমাকে ১৫ হাজার টাকা দিয়েছে। বাকী টাকা না দেওয়া পর্যন্ত আমি তার জমি বন্ধক হিসাবে খেতে চেয়েছি। এছাড়া আকি মোল্যা এ প্রতিবেদককে আরো বলেন, আমি ইচ্ছা করলে হুমায়ুনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দাখিল করে বিদেশে যাওয়া বন্ধ করতে পারি।
এদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা সাসসু শেখ টাকার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি ওই টাকা ছুঁয়েও দেখিনি এবং তাকে ষ্ট্যাম্প দিব এমন কোন কথাও তার সাথে হয়নি। আকি মোল্যা নিজেই বলেছিল কাকা ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে এই সুদে টাকা ওনার হাতে দেওয়া যাবেনা বলে নজরুল শেখকে দেয়।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আরিফুল ইসলাম বলেন, আজ বিকেলে হুমায়ুন কবির নামে এক ব্যক্তি এ সংক্রান্ত একটি আবেদন জমা দিয়েছেন। সমাজ সেবা অফিসারকে এ বিষয়ে তদন্তপূর্বক রিপোর্ট প্রেরণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।