সাইফুল্লাহ নাসির,আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধিঃ
কুয়াকাটা, পায়রা বন্দর সহ দক্ষিণাঞ্চলবাসীকে ফেরিবিহীন সড়ক যোগাযোগ চালু এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।পটুয়াখালীর লেবুখালীর পায়রা নদীর ওপর সেতু নির্মাণকাজ শেষে এখন সৌন্দর্যবর্ধনের আনুষঙ্গিক কাজের পাশাপাশি ধারাবাহিকভাবে আলোকসজ্জা ও পিচ ঢালাইয়ের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার প্রস্তুতি চলছে। ৩১ অক্টোবরের মধ্যে যানবাহন চলাচলের জন্য সেতুটি উন্মুক্ত করে দেওয়ার লক্ষ্যে দিনরাত কাজ করছে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
কুয়াকাটা-ঢাকা-বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কের (এনএইচ-৮) ১৯২ কিলোমিটার এবং বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কের ২৭ কিলোমিটারে লেবুখালীর পায়রা নদীর ওপর সব শেষ সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের ২৪ জুলাই। কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট (কেএফএইডি) এবং ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের (ওএফআইডি) এর যৌথ অর্থায়নে ১ হাজার ৪৪৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণের দায়িত্ব পায় চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লংজিয়ান রোড অ্যান্ড ব্রিজ কম্পানি লিমিটেড। কার্যাদেশে সেতু নির্মাণে ৩৩ মাস সময় বেঁধে দেওয়া হলেও দুই দফায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। তবে তার আগেই আগামী অক্টোবর মাসের মধ্যে সেতু চালু করতে তৎপরতা চালাচ্ছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে সেতু নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল হালিম জানান, লাইটিং সিস্টেমের ১৬৫টি পোস্টের মধ্যে কাজ শেষ পর্যায়ে। সেতুর উপরিভাগের পিচ ঢালাই সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইতিমধ্যে ৭৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এ সেতুর দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৪৭০ মিটার এবং প্রস্থ ১৯.৭৬ মিটার, ১ হাজার ২৬৮ মিটার অ্যাপ্রোচ সড়ক,টোল প্লাজা,প্রশাসনিক ভবন,ইলেকট্রিফিকেশনসহ চার লেনবিশিষ্ট সেতুর ৯২ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ২০০ মিটার করে দেশের দীর্ঘতম দুটি স্প্যান বসানো হয়েছে পায়রা সেতুতে। নদীর তলদেশে বসানো হয়েছে ১৩০ মিটার দীর্ঘ পাইল। যা দেশের সর্ববৃহৎ। এটি নির্মাণ করা হয়েছে চট্টগ্রামের তৃতীয় কর্ণফুলী সেতুর আদলে এবং নান্দনিক ডিজাইনে। পায়রা সেতু বরিশাল বিভাগ তথা দেশের অন্যতম সৌন্দর্যমন্ডিত ও আকর্ষণীয় সেতু হবে।
২০১৩ সালের ১৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পায়রা সেতুর ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন করেন। পদ্মা সেতু এবং পায়রা সেতু খুলে দেওয়ার মধ্য দিয়ে দেশের সর্বদক্ষিণে কুয়াকাটা পর্যন্ত ফেরিবিহীন সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা চালু হবে যা বর্তমান সরকারের উন্নয়নের একটি নতুন মাইলফলক।