

মোঃ আবুল কাশেম, জেলা প্রতিনিধিঃ
ডাঙ্গার অংশসহ তের কিলোমিটার দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট দেশের দীর্ঘতম বর্তমান প্রস্তাবিত ভোলা-বরিশাল সেতু নিয়ে বিশ্বের মহাশূন্য বিশারদগন (space specialists) তালগাছ রোপণ সংক্রান্ত ভাবনা যোগ করতে পারেন। বজ্রপাত জনিত মৃত্যুর হার কমানোর প্রধান সহায়ক হল তালগাছ।” অ্যাওয়ার্নেস আর্মি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে চুয়াডাঙ্গার কুমার নদে এক হাজারটি তাল গাছ রোপনের উৎসব শুরু হয়েছে। অ্যাওয়ার্নেস আর্মি ফাউন্ডেশন গত বিশে সেপ্টেম্বর ২০২১ খ্রিঃ তারিখ বিকাল ০৫:০০ ঘটিকার সময় চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা থানাধীন ওসমানপুর কুমার নদ সংলগ্ন এক হাজার তালগাছের চারা রোপণ উৎসবের আয়োজন করেন। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুযোগ্য পুলিশ সুপার জনাব মোঃ জাহিদুল ইসলাম। পুলিশ সুপার তাঁর বক্তব্যে বলেন, হাত পাখার শীতল বাতাস থেকে শুরু করে বজ্রপাত জনিত মৃত্যুর হার কমানোর প্রধান সহায়ক হল তালগাছ। থাইল্যান্ডের মতো বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় তাল গাছ রোপন করে বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা কমাতে পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার। দুই দশক আগে বাংলাদেশের গ্রাম-গঞ্জের আনাচে কানাচে শোভা পেত অসংখ্য তালগাছ। জনশ্রুতি আছে তালগাছে বজ্রপাত হয় বলে নিধন হতে হতে এখন বিলুপ্তপ্রায়। তিনি আরোও বলেন যে, ২০১৬ ইং সালে বাংলাদেশে বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় তালগাছের উপকারিতা উপলব্ধি করেছেন বিশেষজ্ঞরা। চৈত্রের প্রচন্ড খরতাপে তালের কচিশাস, তালগাছের পাতায় ঝুলে থাকা কারিগর পাখি বাবুইয়ের বাসা, তালপাতার হাত পাখার শীতল বাতাস, বাংলা সালের ভাদ্র মাসের তালের পিঠা এখন প্রায় অতীত। তালের শাঁসের টুপি প্রচুর পরিমানে তাপ শোষণ করে ও মাথা ঠান্ডা রাখে। শুধু তাই নয় তাল গাছের কোন কিছুই ফেলনা নয়। তালগাছ অনেক দিন বাঁচে, অন্য ফসলের কোন ক্ষতি করে না, মাটির ক্ষয় রোধ করে, তাল গাছ ঘর তৈরির উত্তম টেকসই কাঠ, গাছের ডালের গোড়ার অংশ সেদ্ধ করে যে আঁশ পাওয়া যায় তা অত্যন্ত উন্নত মানের তন্তু, জ্বালানি হিসাবে এর চাহিদা অনেক, স্ত্রী ও পুরুষ জাতীয় তালগাছ একটানা নব্বই থেকে এক শত বিশ দিন পর্যন্ত চব্বিশ ঘন্টায় বার থেকে পনের কেজি রস দেয়, যার প্রতি পাঁচ কেজি রস থেকে এক কেজি উন্নত মানের গুড় তৈরি হয়। তালের রসের কাথ উচ্চ মানের মাছ ও গরুর খাবার। তালের আটির উপরি অংশে সুতা খোসা মোজাইক পাথরের বিকল্প হিসাবে ব্যবহৃত হয়, তা ছাড়া তালের রস উচ্চ পুষ্টিমান সমৃদ্ধ সু-স্বাদু খাবার। বসত ভিটা থেকে নিরাপদ দুরত্বে প্রতি বিঘা জমিতে চারটি করে তালগাছ রোপন করলে বজ্রপাতসহ নানা দুর্যোগ মোকাবেলা সম্ভব। যেহেতু তালগাছ লবনাক্ত পানিতে মরেনা, তাই সমুদ্র তীরবর্তী ভুমিতে ঘুর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও মাটিক্ষয় রোধে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। পরিশেষে তিনি উক্ত অনুষ্ঠানে আগত সবাইকে বাড়ির আঙ্গিনায় ও আশেপাশে ধানের চারা রোপণের জন্য আহবান জানান। চুয়াডাঙ্গা জেলার পুলিশ সুপারের উদ্যোগের মত – ব্যাপক হারে তাল গাছ উৎপাদনের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজনী ও সম্ভাবনাময়ী ভোলা জেলার কোথায়ও তালগাছ রোপণের স্বপক্ষে কোন সভা, সেমিনার ও কর্মশালা অনুষ্ঠিত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। তবে ভোলা-বরিশাল সেতু নির্মাণ করা হলে সেতুর ভায়াডাক্ট এর এলাকায় ও সেতুর ডাঙ্গার ভূ-অংশে তালগাছ রোপণের প্রয়োজন থাকতে পারে বলে মহাশূন্য বিশারদগন (space specialists) মনে করেন।
চুয়াডাঙ্গা জেলার উক্ত অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন জনাব কনক কুমার দাস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর), জনাব মোঃ মুন্না বিশ্বাস, সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল), জনাব আলমগীর কবির, অফিসার ইনচার্জ, আলমডাঙ্গা থানা, জনাব মনিরুজ্জামান, কৃষিবিদ, উপজেলা কৃষি অফিসার, দামুড়হুদা সহ রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যক্তিবর্গ। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন আর্মি ফাউন্ডেশন চুয়াডাঙ্গা। ছবি : ভোলা-বরিশাল সেতু।