

মণিরামপুর প্রতিনিধিঃ
মণিরামপুরের শ্যামকুড় ইউনিয়নে গজশ্রী খাল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন দুইবার বন্ধ করে দেওয়া হলেও এলাকার কতিপয় বালুখেকোরা সেটা তোয়াক্কা না করে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে আবারও উত্তোলন করছে। আগে দিনে তিন থেকে চার ঘন্টা ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের সময় প্রশাসন দুইবার বন্ধ করে দেন। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে বন্ধের কয়েকদিন পার হতে না হতেই এখন রাতদিন বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। প্রতিনিয়ত বালু উত্তোলনের ফলে খালপাড়ের ফসলের ক্ষেতের পাড় ভেঙ্গে বিলিন হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
জানাযায়, উপজেলার শ্যামকুড় ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত গজশ্রী খালটি হরিহর নদীর সাথে সংযুক্ত। ফলে শ্যামকুড় ছাড়াও আশপাশের বিভিন্ন্ন ইউনিয়নের মাঠের কৃষকরা শুষ্ক মৌসুমে এ খাল থেকে সেচের মাধ্যমে ফসল ফলিয়ে আসছে। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে এলাকার বেশ কয়েকজন বালুখেকোরা পাড়ুদয়া, লাউড়ী, হালসাসহ বিভিন্ন স্পট থেকে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে ব্যবসা করে আসছে। বালু উত্তোলনের ফলে খালপাড়ের নিচে বড় বড় সুড়–ঙ্গের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে খালপাড়ের ফসলের ক্ষেতের আইল বা পাড় ভেঙ্গে বিলীন হতে চলছে। অবশ্য আশপাশের কৃষকরা বালু উত্তোলনের সময় বাঁধাও দেন। কিন্তু তাদের বাঁধা উপেক্ষা করে বালু খেকোরা উত্তোলন করে চলেছে।
শনিবার সরেজমিন গিয়ে দেখাযায়, পাড়দিয়া জিএইচ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উত্তর-পূর্ব পাশে গজশ্রী খালে বসানো হয়েছে বড় একটি ড্রেজার মেশিন। মেশিনে বড় প্লাষ্টিকের পাইপ সংযুক্ত করে প্রায় আধা কিলোমিটার দুরে জিএইচ পাড়দিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বড় মাঠ ভরাট করা হচ্ছে এ বালু দিয়ে। এ দৃশ্য দেখে মাঠের ধান ক্ষেত দিয়ে আধা কিলোমিটার হেটে যাওয়া হয় ড্রেজার মেশিনের স্থানে। কিন্তু সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে এ সময় ড্রেজার বন্ধ করে বালু উত্তোলনকারীরা সরে পড়েন। পরে এলাকা থেকে মোবাইল নম্বর যোগাড় করে কৌশলে ডেকে আনা হয় বালু উত্তোলনে সহায়তাকারী বাবুল আকতার ও সুলতান হোসেনকে। এক পর্যায়ে তারা দুজনে জানান, স্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতা ও জিএইচ পাড়দীয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মানেজিং কমিটির সভাপতি কামরুজ্জামানের নির্দেশে খাল থেকে তারা বালু উত্তোলন করছেন। এ সময় রিং করা হয় কামরুজ্জামনের মোবাইল ফোনে। তিনি বলেন, মনিরামপুরের শীর্ষ এক জনপ্রতিনিধির সম্মতিতে তারা বালু উত্তোলন করে স্কুলের মাঠ ভরাট করছেন বলে দাবী করেন। মাঠ ভরাটের ব্যাপারে ত্রান দূর্যোগ ও পুনর্বাসন মন্ত্রনালয় থেকে কোন প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আপতত: মাঠটি ভরাট করা হচ্ছে, পরবর্তিতে প্রকল্পের বিষয়টি ভাবা হবে। কথা হয় প্রধান শিক্ষক আবদুল গফুরের সাথে। তিনি বলেন, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির নেতৃত্বে খাল থেকে বালু উত্তোলন করে মাঠ ভরটা করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে ব্যক্তি স্বার্থে নয়, প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে।
এ ব্যাপারে সহকারি কমিশনার (ভূমি) হরেকৃঞ্চ অধিকারী বলেন, ইতোমধ্যে দুইবার অভিযান চালিয়ে গজশ্রী খাল থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ করা হয়েছে। তিনি বলেন, যদি আবারও উত্তোলন করা হয় তাহলে এবার অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।