

সেলিম চৌধুরী নিজস্ব সংবাদদাতাঃ-
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসাধীন এক নবজাতককে বিক্রি করে দেওয়ার একদিন পর শিশুটিকে উদ্ধার করে তার নানীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (৬ অক্টোবর) হাটহাজারি উপজেলার ফতেয়াবাদ এলাকায় অভিযান চালিয়ে চার দিন বয়সী শিশুটিকে উদ্ধার করা হয় বলে জানান পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) জাহিদুল কবির।গ্রেপ্তাররা হলো শিশুটির নানী রাবেয়া খাতুন (৩৫) এবং মনোয়ারা বেগম (৩৭) ও মো. হারুন (৫৫)। তাদের বিরুদ্ধে মানবপাচার প্রতিরোধ আইনে একটি মামলা করেছেন শিশুটির মা তানিয়া বেগম। সেখানে বলা হয়েছে, গত ২ অক্টোবর জালালাবাদ এলাকার একটি ক্লিনিকে জন্ম নেওয়ার পর শারীরিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় শিশুটিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। মা তানিয়াই হাসপাতালে তার দেখাশোনা করছিলেন।
গত সোমবার রাত ১০টা পর্যন্ত হাসপাতালে সন্তানের সঙ্গে ছিলেন তানিয়া। পরে বাচ্চাকে মায়ের কাছে রেখে তিনি বাসায় যান কিন্তু পরদিন দুপুরে এসে আর সন্তানকে পাননি।
ওসি জাহিদুল কবির বলেন, “রাবেয়া পরিকল্পনা করে মেয়েকে ঘরে পাঠিয়ে দিয়ে মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে কোনো এক সময় চট্টগ্রাম মেডিকেল থেকে নাতিকে হারুন ও মনোয়ারার কাছে হস্তান্তর করেন। পরে সেদিন দুপুরে তানিয়া হাসপাতালে গিয়ে সন্তানকে না দেখে নিজের মায়ের কাছে জানতে চান। রাবেয়া তখন তাকে বলেন, বাচ্চা ‘চুরি হয়ে গেছে’।”
শিশুটির মা থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ রাবেয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তখন তিনি শিশুটিকে বিক্রি করে দেওয়ার কথা স্বীকার করেন বলে জানান ওসি।পরে রাবেয়ার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী হারুন ও মনোয়ারকে গ্রেপ্তার করে শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশ।
ওসি জাহিদুল কবির আরো বলেন, “তানিয়া বেগমকে তার স্বামী ঘর থেকে বের করে দেওয়ায় তিনি মায়ের কাছে চলে গিয়েছিলেন। রাবেয়া বলেছেন, মেয়ের চিকিৎসার খরচ বহন করতে তার কষ্ট হচ্ছিল। সেই কারণে শিশুটি গর্ভে থাকা অবস্থায় তাকে বিক্রি করে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন রাবেয়া। সেজন্য বিভিন্ন সময়ে হারুন ও মনোয়ারার কাছ থেকে মোট ৫৭ হাজার টাকা নেন। এদিকে নবজাতকের নাতিকে বিক্রি করে দেওয়ার ঘটনায় সাধারণ মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।