

মোঃ ফরহাদ মিয়া, মুন্সীগঞ্জঃ
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার কেওয়ার নোরাইতলি কাটাখালি বঙ্গবন্ধু সড়ক সংলগ্ন এলাকায় কারখানা তৈরী করেছেন বিভিন্ন ধরনের পার্কিং টাইলস্ , হলো ব্লক, সিমেন্ট ইট, ইন্টার লক,চাক, কমড ও ডাকনা ইত্যাদি উৎপাদন হচ্ছে এখন মুন্সীগঞ্জে।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, মোঃ আফজল হোসেন ১৯৮৯ সালে বিদেশী গমন করেন। আফজল হোসেন ৬ বছর সৌদি আরব ও ২৪ বছর সিঙ্গাপুর ছিলেন সেখানে বিভিন্ন ধরনের পাকিং টাইলস্ ও হলো ব্লকের তৈরী করা অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। কঠোর পরিশ্রম আর সংগ্রাম করে দূর করেছে নিজেদের বেকারত্ব বয়ে এনেছে সফলতা, এনেছে সংসার স্বছলতা। নিজে স্বপ্ন দেখিয়েছে,অন্যকেও ভালোভাবে বাচাঁর স্বপ্ন দেখিয়েছে। আর এর সবটুকুই সম্ভব হয়েছে দৃঢ় মনোবল ও আত্মবিশ্বাসে। বাংলাদেশে এসে ২০১৭ সালে বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং এস.বি.আর.এস প্রশিক্ষণ মাধ্যমে সদন পত্র দিয়ে কাজ শুরু করেন। আফজল হোসেন কারখানাটি নাম রাখেন,“মেসার্স এস.আর.এম.হলো ব্লক, ব্রীক ও পার্কিং টাইলস্ ফ্যাক্টরী” ক্ষুদ্র এই কারখানাটি কালের পরিক্রমায় ভবিষ্যতে বৃহৎ আকার ধারন করবে বলে প্রত্যাশা অনেকেরই। খুব অল্প সময়ে তার উৎপাদিত হলো ব্লক ও পাকিং টাইলস্ মুন্সীগঞ্জ জেলায় যেমন কদর বেড়েছে তেমনি কদর বাড়তে শুরু করেছে সারাদেশে। কিন্তু সরকারি কোন পৃষ্ঠপোষকতা না থাকায় এবং আধুনিক প্রযুক্তি অভাব ও পুজির অভাবে উৎপাদন কম হচ্ছে। ফলে চাহিদা পূরণে তিনি ব্যর্থ হচ্ছেন। এক সময় তিনি নিজেই এই কাজ করতেন । এখন প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন শ্রমিকদের আর কারখানা তদারকি করছেন। তিনি বলেন ‘লেখাপড়া করে শুধু চাকরির পেছনে ছুটেলে চাকরিই সফলতা এনে দেবে, এমন ভাবাটা ভুল। লেখাপড়া শেষ করে নিজের মেধা আর পরিশ্রমকে কাজে লাগিয়ে চাইলে অন্যভাবেও সফল হওয়া যায়। তৈরি করা যায় কর্মসংস্থান।’ মুন্সীগঞ্জে গড়ে তুলেছেন ব্লক পার্কিং টাইলসের কারখানা। ছোট পরিসরে হলেও কারখানায় উঁকি দিচ্ছে বিরাট সম্ভাবনা। বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ হওয়াটা এখন শুধু সময়ের ব্যাপার। তিনি আরও বলেন যে কোন জেলায় “হলো ব্লকের ও পার্কিং টাইলস্ অর্ডার এর জন্য বা পরামর্শ এর জন্য যোগাযোগকরতেন পারেন এই নাম্বারে ০১৮৬১৮৮৯৮২৭, ০১৭১৫৬২৮২৮৫।
আফজল হোসেনের তৈরি টাইলস্ এখন নিজ জেলার গণ্ডি পেরিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। ব্যবসা শুরুর ১২ মাসেই পাওয়া ব্যাপক সাফল্য আজ হাসি ফুটিয়েছে অনেকের মুখে। তিনি আরও বলেন, ‘আমি সেই হলো ব্লক ও পার্কিং টাইলস্রে অভিজ্ঞতা প্রায় ২৪ বছর। খেয়াল করি যে, কারখানায় তৈরি পার্কিং টাইলস্ ব্যবহৃত প্রধান কাচামাল সিমেন্ট, বালু ও নুড়ি পাথর। আমাদের দেশে তথা নিজ এলাকাতেই বেশ সহজলভ্য এই কাঁচামাল। ছোট আকারে শুরু করতে পুঁজিও তেমন লাগছে না। তখনই দেশে ফিরে এমন একটি কারখানা গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেই। আফজল হোসেন বলেন,আমি ২০১৭ সাল থেকে কারখানা দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করি অল্প টাকা লাখ পুঁজি নিয়ে ২০১৭ সালে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করি হলো ব্লক ও পার্কিং টাইলস । নিজ জেলায় ব্যাপক সাড়া পাই। আস্তে আস্তে পার্শ্ববর্তী জেলায় যাওয়া শুরু করে বিভিন্ন ধরনের পণ্য। তবে, এখন সারাদেশে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অর্ডার পাচ্ছি।
পার্কিং টাইলস্ ও হলো ব্লক কারখানায় কর্মরত শ্রমিক মোঃ আব্দুল কালাম শারীরিকভাবে দুর্বল হওয়ায় তার আগের অন্য পেশায় কাজ করতেন। তিনি বলেন, ‘এক বন্ধুর কাছ থেকে জানতে পেরে আমি আফজল হোসেনের কারখানায় কাজ নিয়েছি। হালকা কাজে ভালো পারিশ্রমিক পেয়ে আমার মতো বাকিরাও বেশ খুশি।
আফজল হোসেন বলেন, সরকারিভাবে সহযোগিতা করে আমার কাজে উৎসাহ দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করি। আমি আরও আমার কাজের মান উন্নত করতে চাই। আমার সফলতা অন্য তরুণদের উদ্যোক্তা হতে উৎসাহী করবে।’ আমরা চাই ভালো ভালো উদ্যোক্তা সৃষ্টি হোক।
ইঞ্জিনিয়ার ফয়সাল আহম্মেদ ইমন বলেন, হলো ব্লক একটি পরিবেশবান্ধব নির্মাণ প্রযুক্তি, সিমেন্ট, বালু ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ৪ মিমি পাথরের কণা বা ডাস্ট সমন্বয়ে এই ব্লক তৈরী করা হয়। ম্যানুয়েল, মেকানিক্যাল বা হাইড্রোলিক মেশিন ব্যবহার করে এ ব্লক তৈরী করা যায়। ফলে ব্যয়সাশ্রীয় হয়। ব্লকের ওজন কম, আকার-আকৃতি ভালো। গরমে ও শীতে ঘর আরামদায়ক ও বিদ্যুৎসাশ্রয়ী হয়। একটি ব্লক পাঁচটি ইটের সমান, কমবে মিন্ত্রি খরচ আবার প্লাষ্টার কম খরচ হবে। সাশ্রয়ী টেকসই ও পরিবেশবান্ধব। এছাড়া এই ব্লক মাঝখানে ফাঁকা থাকে বলে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রনে থাকে এসি ঘরের মত। এটি শব্দ প্রতিরোধ করে। আধুনিক প্রযুক্তি ও ভূমিকম্প সহনশীল।