

রিপোর্টারঃসৈয়দ সালমান হোসেন
মাদারীপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
প্রকৃতিতে এখন শীতল হাওয়া বইছে।পড়ন্ত বিকেলে রোদের তেজ ম্লান হতেই আবছা কুয়াশার চাদর ছড়িয়ে দিচ্ছে প্রকৃতির বুকে।গভীর রাতে ঠাণ্ডা অনুভূত হয়।এ যেন শীতের আগাম বার্তা।ঋতুর পালাক্রমে শীত আসতে আরো কিছুদিন বাকী থাকলেও প্রকৃতির রহস্যময়তায় এখন আর ঋতু ক্যালেন্ডারের দিনক্ষণ গুণে গুণে আসেনা।তারই আভাস যেন দেখা যাচ্ছে রূপসী বাংলার পথে প্রান্তরে।
ভোরের মিষ্টি আলো ধানক্ষেতের উপর ছড়ানো শিশির কণা স্পর্শ করতেই মুক্তাদানার মতো চিক চিক করে উঠে,হাট–বাজারে টাটকা শাক–সবজি, বিল–হাওরে অতিথি পাখির গুঞ্জন, দিনের শেষে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার পূর্বক্ষণে গ্রাম–বাংলার প্রকৃতিতে মাকড়সার জালের মতো হালকা কুয়াশা,ভোর রাতে পাতাঝরা বৃক্ষে কুয়াশার রূপালী ফোঁটা,বৈকালিক মৃদু শীতল হাওয়াটা জানান দেয় ঋতুর পালাবদলে শীতের আগমনীবার্তা।ছয় ঋতুর এই দেশে পৌষ–মাঘ এই দুই মাস শীতকাল হলেও প্রকৃতিতে শীত হাজির হয় তারো আগে।অগ্রহায়ণ মাসেই হালকা কুয়াশা ছড়াতে শুরু করে।হাড় কাঁপানো শীতে খেটে খাওয়া মানুষের জীবনে দূর্ভোগ নিয়ে আসলেও আবহমান কাল ধরে গ্রামীণ জনপদে শীতকাল হাজির হয় নানান বৈচিত্র্যের সম্ভারে।শীতকালের প্রসঙ্গ উঠলেই মনে পড়ে যায় খেজুরের রস দিয়ে ভাপা পিঠা খাওয়া, সন্ধ্যা নামলেই খড়কুটো জ্বালিয়ে গ্রামীণ জনপদের অনেক জায়গায় শীত নিবারণের দৃশ্য কিংবা মুক্ত আকাশের বুকে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির আনাগোনা আর রাতে লেপতোষক গায়ে জড়িয়ে ঘুমানোর স্মৃতি।শীতে গ্রামের প্রকৃতি হয়ে উঠে প্রাণবন্ত।গ্রামের বুক চিড়ে বয়ে চলা খালের ধারে বিস্তীর্ণ আবাদি জমিতে সবজি ক্ষেতের দৃশ্য গ্রামের রূপকে করে মোহনীয়।
এ সময় হলদে বর্ণ ছড়িয়ে ফসলের মাঠ রাঙিয়ে তোলে সরষে ক্ষেত।ফসলের ক্ষেতের মাঝখানে সরু রাস্তা দিয়ে হাঁটার সময় সবুজ ফসলের মাঠ মানুষের মনে এনে দেয় প্রশান্তি।
গ্রামীণ জীবনের মতো শহুরে জীবনে শীত বৈচিত্র্যময় নয়।সারি সারি অট্টালিকা আর কলকারখানার ভিড়ে শীতের তীব্রতা নগর জীবনে তেমন একটা প্রভাব ফেলতে পারেনা।তাছাড়া নগরে মানুষের ঠাসাঠাসিতে শীত তেমন একটা অনুভূত হয়না।তবে গ্রামীণ জনপদের মতো নানান বৈচিত্র্যের সম্ভার নিয়ে হাজির না হলেও নগরে শীতের আমেজ ফিরিয়ে আনে পিঠাফুলির মতো বৈচিত্র্যময় উৎসব।চলে নানান আয়োজন।
আমাদের দেশে উত্তরাঞ্চলে শীত বেশি অনুভূত হয়।এ অঞ্চলের দরিদ্র মানুষের জীবনে বর্ষার মতো শীতকালও বয়ে আনে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ।তীব্র শৈত্য প্রবাহে অনেকের মৃত্যু হয়।আবার পাহাড়ি জনপদেও শীতের তীব্রতা বেশি দেখা যায়।
হঠাৎ পল্লীর প্রকৃতিতে শীতের আগমনী সম্পর্কে জানতে চাইলে ডাসার প্রেসক্লাবের সভাপতি সৈয়দ রাকিবুল ইসলাম বলেন,অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার শীত একটু আগেই পড়তে শুরু করেছে।শীতের মৌসুম আসতে এখনও বেশ কিছুদিন বাকি।