

মোঃ মোজাম্মেল হোসেন বাবু রাজশাহীঃ
রাজশাহী মহনগরীতে আজ ৩ নভেম্বর, শোকাবহ জেলহত্যা দিবস। এটি বাঙালি জাতির জীবনে এক কলঙ্কময় দিন। ১৯৭৫ সালের এই দিনে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন রাজনৈতিক সহযোদ্ধা ও মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী জাতীয় চার নেতা স্বাধীন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রথম রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবর্তমানে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালনকারী উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ, অর্থমন্ত্রী এম. মুনসুর আলী, খাদ্য ও ত্রাণ মন্ত্রী এ এইচ. এম কামারুজ্জামানকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
সাড়ে চার দশক আগে কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যার দিনটি নানা কর্মসূচিতে স্মরণ করছে বাংলাদেশ। সকালে ঢাকার বনানী কবরস্থানে তিনজন ও রাজশাহী নগরীর কাদিরগঞ্জ পরিবারিক কবরস্থানে একজনের সমাধিত ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর ৩ নভেম্বর তার ঘনিষ্ঠ চার সহকর্মী সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, এম মনসুর আলী ও এ এইচ এম কামরুজ্জামানকে কারাগারে হত্যা করা হয়। বাংলাদেশের ইতিহাসে ৩ নভেম্বর কলঙ্কময় ও বেদনাবিধুর একটি দিন। রাষ্ট্রের হেফাজতে জেলখানায় জাতীয় চার নেতা হত্যার দিনটি ‘জেল হত্যা দিবস’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
বাঙালি জাতির ইতিহাসে আরেকটি কলঙ্কিত অধ্যায়ের নাম জেল হত্যাকাণ্ড। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারের অভ্যন্তরে বিনাবিচারে এই হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়।
বুধবার (৩ নভেম্বর) সেই কলঙ্কিত দিন, জেল হত্যা দিবস।
জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে আওয়ামী লীগ।
১৯২৩ সনের ২৬ জুন রাজশাহী জেলার তৎকালীন নাটোর মহকুমার বাগাতীপাড়ার মালঞ্চী রেলওয়ে ষ্টেশনের পাশ্বের তমাল তলা বাজারের কাছে নূরপুর গ্রামে নানা আব্বাস সরকারের বাড়িতে জন্ম জাতিয় নেতা শহিদ আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের (এ. এইচ. এম কামারুজ্জামান হেনা)। তাঁর নানির নাম জামিলা।
করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে গতবারের মত এবারও জনসমাগম সীমিত করে জেলহত্যা দিবসের কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো ধারণ করেছেন শোকের কালো ব্যাজ। দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশে সংগঠনের বিভিন্ন কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিত করা হয়; উত্তোলন করা হয় কালো পতাকা।
দিনটি উপলক্ষে বুধবার সকালে রাজশাহীতে কামারুজ্জামানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীসহ সর্বস্থরের মানুষ। শ্রদ্ধা জানায় পরিবারের সদস্যরাও। পরিবার, দল ও সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন কামারুজ্জামানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। প্রথমে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ও পরে মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মেয়র লিটন পুস্পস্তবক অর্পন করেন। শ্রদ্ধা নিবেদনের পাশাপাশি ফাতেহা পাঠ, মিলাদ ও মোনাজাতেও অংশ নেন দলের নেতাকর্মীরা।