

সেলিম চৌধুরী নিজস্ব সংবাদদাতাঃ-
চতুর্থ ধাপে ইউপি নির্বাচনে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার ছনহরা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এবার তৃণমূল নেতা হিসাবে প্রধানমন্ত্রীর চমক নৌকার মাঝি হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ সামশুল আলম। গত ইউপি নির্বাচনে প্রার্থী দুর্বলতার কারণে ছনহরার চেয়ারম্যান পদটি আওয়ামী লীগের হাতছাড়া হয়ে যায়। তাই এবার প্রার্থী বাছাইয়ে ভুল করেননি দলের হাইকমান্ড স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের সন্তুষ্ট করে তাদের বাছাইকৃত প্রতিনিধিকেই বানিয়েছেন নৌকার মাঝি। তাদের হাইকমান্ডের নিকট দাবি ছিলো, দলীয় প্রার্থী না জিতলে এলাকার উন্নয়ন ব্যাহত হয়। এদিকে মুক্তিযোদ্ধা সামশুল আলমকে নৌকার মাঝি মনোনীত করায় এলাকার সাধারণ ভোটারদের মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপণার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, চতুর্থ ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের যে তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে তাতে পটিয়ার ছনহরা ইউনিয়ন পরিষদের নামও রয়েছে। প্রার্থী বাছাইয়ে ভুল হওয়ায় বিগত নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী আবদুর রশীদ দৌলতির কাছে হেরে যান আওয়ামী লীগ প্রার্থী কামাল উদ্দিন ওরফে সিএনজি কামাল।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবী ছিলো, এবার প্রার্থী বাছাইয়ে ভুল করা যাবে না। তৃণমূলে জন প্রিয় ও ইমেজধারী মুক্তিযোদ্ধা সামশুল আলমকে এবার মনোনয়ন দিলে ছনহরা ইউপি চেয়ারম্যান পদটি এবার পুনরুদ্ধার হওয়া সম্ভব। হাইকমান্ড স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের সন্তুষ্ট করে তাদের বাছাইকৃত প্রতিনিধিকেই বানিয়েছেন নৌকার মাঝি। দৈনিক জনতা ও দৈনিক ইনফো বাংলা প্রতিবেদকের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে বীর মুক্তি যোদ্ধা শামসুল আলম জানান, ছাত্রজীবন থেকে প্রগতিশীল সব আন্দোলন-সংগ্রামে জড়িত ছিলেন। ১৯৬৭ সালে পটিয়া সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক, ১৯৬৯ সালে সাংগঠনিক সম্পাদক, ১৯৮৩ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত ছনহরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি, ২০০৫ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা কৃষক লীগেরসহ সভাপতির দায়িত্বে ও বর্তমানে সিনিয়র সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।তিনি পটিয়া উপজেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬ সালের ৬ দফা ও ৭০ এর সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নানা কর্মসূচিতে সরাসরি অংশ নেন। সর্বোপরি ৭১’র মুক্তিযুদ্ধে রণাঙ্গনে সম্মুখসমরে অংশ নেন তিনি। বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল আলম এর গ্রুপ কমান্ডার মরহুম অবু সৈয়দের নেতৃত্বে ভারতের বাগাফা প্রক্ষিক্ষণ শিবিরে প্রশিক্ষণ নিয়ে যুদ্ধে অংশ নেন। মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি স্বরুপ ২০১৭ সালে ভারত সরকার বাংলাদেশের ৩০ জন মুক্তিযোদ্ধা ও ৬ জন বেসামরিক কর্মকর্তাকে সংবর্ধনার জন্য মনোনীত করেন। ২০১৭ সালে ভারতের কলকাতায় ৫দিন ব্যাপি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয়ভাবে সংবর্ধনা আয়োজন করে এ ৩৬ জনকে আর্ন্তজাতিক সংবর্ধনা প্রদান করেন। সে সংবর্ধনায় চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে একমাত্র শামসুল আলমেই মনোনীত হন। তিনি পটিয়া উপজেলার ছনহরা ইউনিয়নে আলমদার পাড়া গ্রামের আব্দুর রশিদ ভেন্ডারের ৬ সন্তানের মধ্যে সবার বড় ছেলে শামশুল আলম। যুদ্ধকালীন এ টগবগে যুবগের বয়স ছিল ২২ বছর।
শামশুল আলম একান্ত সাক্ষাতকারে জানান, জীবনে আর কিছু চাওয়ার নেই। মৃত্যুর পড়োয়া না করে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে দেশকে স্বাধীন করে সফলভাবে ফিরে এসেছি। বঙ্গবন্ধুর ডাকে সেদিন মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলাম। তারই সুযোগ্য কণ্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে নৌকা প্রতিকের জন্য আবেদন করেছিলাম। তিনি আমাকে বিমুখ না করে আমাকে মূল্যায়ন করেছেন তাঁর কাছে আমি ও আমার পরিবার চীর কৃতজ্ঞ। তিনি জনপ্রতিনিধি হতে পারলে বাকি দিনগুলো জনগনের খেদমত ও সুখে দুঃখে পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যাক্ত করেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নে আগামী দিনগুলোতে তৃণমূলকে ডেলে সাজাবেন এবং প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে আরো শক্তিশালী করে তুলবেন বলে প্রত্যাশা করছেন।ছনহরা ইউনিয়নের ভোটার সরোয়ার উদ্দিন মাইজভান্ডারি ও সাবেক মেম্বার গিয়াস উদ্দিন জানান, মুক্তিযোদ্ধারা জাতীর শ্রেষ্ট সন্তান। এ তৃণমূল নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা সামশুল আলমকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সম্মান দেখিয়েছেন তাঁর জন্য আমাদের উচিত হবে ছনহরাবাসী বিপুল ভোটে নৌকাকে জয়যুক্ত করে প্রধানমন্ত্রী ও মুক্তিযোদ্ধা সামশুল আলমের সম্মান রক্ষা করা। ২৬ ডিসেম্বর চতুর্থ ধাপে ইউপি নির্বাচনে বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল আলম কে নৌকা প্রতিকে ভোঠ দিয়ে বিজয়ী করার জন্য ছনহরা ইউনিয়নবাসীর প্রতি আহবান জানান।