

হাকিকুল ইসলাম খোকন ,যুক্তরাষ্ট্র সিনিয়র প্রতিনিধিঃ
উনিশো বায়ান্নর একুশে ফেব্রুয়ারীতে মাতৃভাষার জন্য আত্মত্যাগকারী ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি সম্মান জানাতে সেন্ট্রাল ফ্লোরিডা মহানগর আওয়ামী লীগ অমর একুশ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করে একুশের প্রহরে ২০ ফেরুয়ারী ,রবিবার রাত আটটায় অরল্যান্ডোর বাঙালিদের প্রাণকেন্দ্র মশলা কিচেন চত্বরে | মূলতঃ নুতন প্রজর্ম্ম ও বহির্বিশ্বে মাতৃভাষা প্রতিষ্ঠার রক্তাক্ত ইতিহাস তুলে ধরতে এই অনন্য আয়োজন | এতে অংশ গ্রহণ করে প্রবাসের আপামর বাঙালি, নুতন প্রজর্ম্ম , নারী পুরুষ সকলে | বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন বাংলাদেশ সোসাইটি , বাংলাদেশ আমেরিকান ফাউন্ডেশন, আনন্দধারা , বরিশাল বিভাগীয় সমিতি এতে অংশগ্রহণ করে | সন্ধ্যা আটটার মধ্যে স্বাস্থবিধি মেনে সর্বশ্রেণী মানুষের আগমনে মুখরিত হয়ে উঠে অস্থায়ী শহীদ মিনার চত্বর | অনুপ্রেরণা গর্ব শক্তি ও আত্মত্যাগের মহান দিবসটির আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন মোয়াজ্জেম ইকবাল এবং সঞ্চালনা করেন ফখরুল আহসান শেলী | জসীম উদ্দিনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনার পর সমবেত জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হয় | অতঃপর ভাষা শহীদ সহ দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় | এরপর “মাতৃভাষা প্রতিষ্ঠা থেকে স্বাধীনতা প্রাপ্তিতে একুশের ভূমিকা ” শীর্ষক আলোচনায় সংগঠনের ও কম্যুনিটির নেতৃবৃন্দ অংশ নেন | বাঙালির মননে পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে বায়ান্নর একুশ মায়ের ভাষা প্রতিষ্ঠা , স্বদেশ ভূমি ও জাতিসত্তা ফিরিয়ে দিয়েছে | একুশ না হলে একাত্তর হত না , স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতা আসতোনা | রাজনীতি দেশপ্রেম অর্থনীতি শিক্ষা সংকৃতির বিকাশ হতনা | একুশের চেতনা আমাদের গণতান্ত্রিক ও ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্রব্যাবস্থার স্বপ্নদিশারী | বায়ান্ন থেকে লাগাতার আন্দোলন সংগ্রামে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলার মানুষকে মুক্তির নেশায় অনুপ্রাণিত করে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিলেন | ভাষা আন্দোলনের পটভূমি বিস্লেশনে উপরোক্ত আলোচনায় আলোকপাত করেন জসীম উদ্দিন, সালেহ করিমুজ্জামান, ইলিয়াস ঠাকুর, শামসুস তোহা , শাওন প্রজা ,ফখরুল আহসান শেলী ,রাসেল আহমেদ এবং মোয়াজ্জেম ইকবাল |খবর বাপসনিউজ।
হৃদয়গ্রোথিত ধারা বর্ণনায় ভাষাসৈনিক ও শহীদের অনুপম কৃতি তুলে ধরেন করিমুজ্জামান | ভাষা শহীদ ও দেশমাতৃকায় সাহাদাৎবরণকারীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত পরিচালনা করেন জসীম উদ্দিন | সাংস্কৃতিক পর্বে কালজয়ী
গানে এ প্রজন্মের শিল্পী অনন্ত ও প্রত্যয় সকলকে বিমুগ্ধ করে, স্বনামধন্ন গীতিকার সুরকার শফিকুল ইসলামের অনবদ্য গান সকলকে জন্মভূমিতে নিয়ে যায় | ভাষা শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে গান পরিবেশন করেন গুণী শিল্পী বীর মুক্তিযোদ্ধা এম খসরু,মাটি ও মানুষের গায়ক সুরকার পল্লী ইসলামের স্বরচিত গানে আলোড়িত হয় দর্শক শ্রোতা | কবিতায় নির্যাস ছড়িয়ে দেয় নবনী | নৃত্যের তালে ও গীতি নাট্যে বঝংকার তুলে লিপি | শহীদ মিনার স্থাপন ,কালোব্যাজ ধারণ, নৈশভোজ ও সার্বিক সহযোগিতায় যাদের প্রাণবন্ত ব্যাবস্থাপনা সেবা দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তারা হলেন তোহা , জসীম,করিম, শাজাহান কাজী , কনক রেজা, জুয়েল চৌধুরী, মাইনুল | রাত বারোটা পর শহীদদের সৃতির প্রতি সন্মান প্রদর্শনে শহীদমিনারে সর্ব প্রথম পুষ্পার্গ অৰ্পন করে সেন্ট্রাল ফ্লোরিডা মহানগর আওয়ামী লীগ | এতে সহকর্মীদের নিয়ে নেতৃত্ব দেন মোয়াজ্জেম ইকবাল ,ফখরুলআহসানশেলী,জসীম ,আলম ইলিয়াস | তারপরে শামসুস তোহা, আপেল ও ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সোসাইটি , বাংলাদেশ – আমেরিকান ফাউন্ডেশনের পক্ষে নেতৃত্ব দেন রাসেল,মিলু | আনন্দধারার পক্ষে খসরু , পল্লী ইসলাম, বরিশাল বিভাগ সমিতির পক্ষে মীম,শফিক,অনন্ত -প্রত্যয় , নোয়াখালী সমিতি যুক্তরাষ্ট্র পক্ষে কনক ,ফয়সল | সম্মিলিত নারী নেতৃত্বে তান্নি আহমেদ , তানজিন সানী , মিসেস কনক , মিসেস জসীম ,মিসেস জুয়েল ,লিপি , নবনী এবং নুতন প্রজর্ম্ম শিশুদের পক্ষথেকে একঝাক কচি প্রাণ ও উপস্থিত নারী পুরুষ সকলে শহীদ মিনারে পুষ্পার্পন করেন | দেশ বন্ধনায় এক টুকরো লাল সবুজের বাংলাদেশ ফিরে পায় প্রবাসী বাঙালি সমাজ | তখন মাইক্রোফোন থেকে অপূর্ব মূর্ছনায় প্রতিধন্বিত হয় আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী, আমিকি ভুলিতে পারি ?