

বাকেরগঞ্জ প্রতিনিধি/
বরিশালের বাকেরগঞ্জের কলস কাঠী ইউনিয়নের কলস কাঠী হাট-বাজারে অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া কৃষকের কোনো খাজনা না থাকলেও তাদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ। ইজারার শর্ত অমান্য করে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়পক্ষের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে খাজনার অর্থ । এতে ইজারাদার লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন হাটুরেরা।
বাকেরগঞ্জ উপজেলার দ্বিতীয় বৃহত্তম হাট হচ্ছে কলস কাঠী হাট । এই হাট কয়েকটি ইউনিয়নের ধান ও চালের মোকাম হিসেবে খ্যাত। চলতি ১৪২৯ বাংলা সনে হাটের ইজারা হয়েছে ২০ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা। হাটটি টেন্ডারের মাধ্যমে কলস কাঠীর ইউপির বাগদীয়া গ্রামের মৃত্যু আদমআলী খান এর পুত্র সোহরাব খান ইজারা নেন। শুরু থেকেই অতিরিক্ত অর্থ আদায় করলেও বর্তমানে ইজারা শর্ত অমান্য করে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয় পক্ষের কাছ থেকে মাত্রা অতিরিক্ত খাজনা আদায় করা হচ্ছে। শনি ও মঙ্গলবার কলস কাঠী হাটে গিয়ে দেখা যায়,মাছ বাজারে ৪০ থেকে ৫০টি ভ্রাম্যমান দোকান। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী দোকান প্রতি ৬ টাকা নেয়ার কথা থাকলেও নেয়া হচ্ছে ৫ থেকে ৬ শত টাকা, এমনকি প্রতি কেজিতে ৬ পয়সার স্থানে নেয়া হচ্ছে ৫ থেকে ৮টাকা পরযন্ত কাঁচামালের দোকান প্রতি ৬ টাকার পরিবর্তে ৪ থেকে ৫শত টাকা নেয়া হচ্ছে, পান সুপারি সহ সকল দোকান থেকে আদায় করা হচ্ছে মাত্রা অতিরিক্ত অর্থ। মাছ বিক্রেতা মোঃ মহিউদ্দিন শিকদার, সেলিম, আবুল সিকদার,দেলোয়ার, মিজান, ছিদ্দিক, সহ একাধিক ব্যাক্তি সংবাদ মাধ্যম কে জানান, কলস কাঠী বাজারের ইজারাদার এর অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে তারা গত ১৮-০৪-২২ তাং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পশু ক্রয়-বিক্রয়ে শুধু ক্রেতার খাজনা দেওয়ার কথা। কিন্তু প্রতিটি গরুর ক্ষেত্রে ৩০০ টাকার স্থলে ক্রেতার কাছ থেকে ৬০০ টাকা এবং বিক্রেতার কাছ থেকে ২০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। ভেড়া বা ছাগলের ক্ষেত্রে ক্রেতার কাছ থেকে ১৫০ টাকার স্থলে ৩৫০ টাকা এবং বিক্রেতার কাছ থেকে আরও ১০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। এ ছাড়াও হাটে ধান বিক্রিতে ক্রেতার জন্য প্রতি মণ ৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যদিকে সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূতভাবে প্রতি মণ ধানে কৃষকের কাছ থেকে ১০ টাকা করে খাজনা আদায় করছেন ইজারাদার। হাঁস-মুরগির ক্ষেত্রেও নিয়ম অমান্য করে উভয়পক্ষের কাছ থেকে অতিরিক্ত খাজনা আদায় করা হচ্ছে। গরুছাগল বিক্রয়ে রসিদের মাধ্যমে খাজনা আদায় করলেও সেখানে টাকার পরিমাণ উল্লেখ না করেই ফাঁকা রেখে রসিদ হাতে ধরে দেওয়া হচ্ছে বলে ক্রেতা-বিক্রেতারা জানিয়েছেন।
হাটে খাসি কিনতে আসা উপজেলার গারুড়ীয়া ইউনিয়নের সাহেব পুর গ্রামের জাকির মৃধা জানান, খাসি কিনে ১৫০ টাকার স্থলে ৩৫০ টাকা দিতে হয়েছে।
হাটে ধান বিক্রি করতে আসা কৃষক মোঃ মজিদ, আব্দুর রশিদ, রহমান, আলমগীর হোসেনসহ অনেকেই জানান, ধান বিক্রিতে শুধু ক্রেতার খাজনা দেওয়া বিধান থাকলেও প্রতি মণ ধান বিক্রিতে বিক্রেতার কাছ থেকেও ৫ থেকে ৬ টাকা হারে খাজনা আদায় করা হচ্ছে বাজারের কোথাও সরকার নির্ধারিত মূল্যের তালিকার চাট টানানো দেখা যায়নি। এবিষয়ে ইজারাদার সোহরাব খান জানান অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে না, তবে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত তালিকার চাট টানানোর বিষয়টি এড়িয়ে যান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাধবী রায় জানান অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এবং খাজনার মুল্যের তালিকা তৈরি করে টানিয়ে দেয়া হবে।