

সেলিম চৌধুরী নিজস্ব সংবাদদাতাঃ-
চট্টগ্রামের পটিয়ার কৃষি স্কুলের আশপাশের দশটি গ্রামের শত শত একর কৃষি জমিতে হচ্ছে না চাষাবাদ। এতে করে এলাকার শত শত চাষাবাদ বন্ধ হওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে কৃষকরা অসহায় দিনযাপন করতে হচ্ছে । সার্জেন্ট মহি আলম খালের দূষিত পানির দুর্গন্ধে মহাসড়ক দিয়ে লাখো মানুষ চলাফেরা করছেন নাকে রুমাল চেপে। এমনকি কৃষি স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। গতকাল বুধবার দুপুরে
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-আরকান মহাসড়কের পাশ ঘেঁষে পটিয়া উপজেলার জঙ্গলখাইন ইউনিয়ন পরিষদের নাকের ডগায় এলাকায় কয়েকটি কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য খালে ইটিপিবিহীন বর্জ্য ফেলছেন বলে স্থানীয় কৃষকের অভিযোগ। এতে জঙ্গলখাইনের নাইখান থেকে মনসা বাদামতল পর্যন্ত ৮ কিলোমিটারজুড়ে সার্জেন্ট মহি আলম খালের পানি বিষাক্ত হয়ে পড়েছে।
পানি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় অনেক আগেই মরে গেছে ওই খালোর সব মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণী এবং উদ্ভিদ। এসব পচে এখনো ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। খাল এলাকার মানুষ গোসল, সেচ, গৃহস্থালী কাজে খালের পানি ব্যবহার করতে পারছে না। না বুঝে কেউ পানিতে নামলে শরীরে চুলকানি সহ নানান রোগ ছড়াচ্ছে। এ ছাড়া পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে খাল এলাকার মানুষ। খালটি মহাসড়কের পাশে হওয়ায় প্রতিদিন লাখো যাত্রী দুর্গন্ধে নাকেমুখে রুমাল চেপে চলতে বাধ্য হচ্ছেন। স্থানীয়দের দাবি, স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের ম্যানেজ করে চলছে এই কারখানাটি। পরিবেশ অধিদফতরের লোকজন প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করলেও রহস্যজনক কারণে তারা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন। এলাকার লোকজনের অভিযোগ পরিবেশ অধিদপ্তরের লোকজন মাসোহারা পেয়ে নীরব রয়েছে।
এসব কারখানা লাগোয়া ইউনিয়ন কৃষি স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও জঙ্গলখাইন ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয়। তারা পরিবেশ অধিদফতরে বেশ কয়েকবার অভিযোগ করলেও মাঝেমধ্যে লোক দেখানো অভিযান পরিচালনা করা হয়। কিন্তু এসব অভিযানে স্থানীয় বাসিন্দাদের কোনো উপকার হয়নি। তবে, তরল বর্জ্য পরিশোধনাগার (ইটিপি) অকার্যকর রাখায় ২০১৯ সালে কারখানাটিকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। স্থানীয়রা আরও জানান, কৃষি স্কুল সামনে এবং গৈডলার টেক, শাহ আমানত ড্রাইডিং কারখানাসহ বিভিন্ন কারখানার তৈরি করা হয় মিষ্টিজাতীয় বিভিন্ন পণ্য এবং বিস্কুট ও পাউরুটি। কারখানাটির দূষিত বজ্যৃ এভাবে ফেলার কারণে সার্জেন্ট মহি আলম খালের পানিসহ চাঁনখালী খাল ও বোয়ালখালী খালের পানিরও একই অবস্থা।
কস্টিক অ্যাসিডের এ মিশ্রণ খালে ফেলায় কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে খালের পানি কালো হয়ে গেছে।খালের দুই তীরে বর্জ্যরে ফেনা জমে কোথাও কালচে, কোথাও লালচে আকার ধারণ করেছে। সাত বছর ধরে বর্জ্যরে পরিমাণ দিন দিন বাড়তে থাকায় এখন খাল-তীরবর্তী মানুষ দুর্গন্ধে এলাকায় টিকতে পারছেন না। জঙ্গলখাইন ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সবুজ জানান, কয়েকটি কারখানার সার্জেন্ট মহি আলম খালে বর্জ্য ফেলায় খালের পানির দুর্গন্ধে ইউনিয়ন পরিষদে সহজে কেউ আসতে চাই না। আমিও এখানে বসে কাজ করতে কষ্ট হয়। বিষয়টি প্রশাসনকে একাধিকবার জানিয়েছি, তিনি আরোও বলেন, গতমাসে কলকারখানা কে নোটিশ দিয়েছি ১৫ দিনের মধ্যে বর্জ্য পানি খাল না ফেলার জন্য এখনো এর সদক্তর পায়নি আগামী মাসে পরিষদের সিদ্ধান্তক্রমে স্কেভেটর দিয়ে খালের মুখে যেসব স্থান দিয়ে বর্জ্য পানি খাল পড়ে সেসব মুখ দেওয়াল দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হবে, ফুলকলিসহ কলকারখানায় জঙ্গলখাইন ইউনিয়নবাসী একজনের চাকরি পায়নি সব বহিরাগত লোকজন। কোন অবস্থাতে জঙ্গলখাইন ইউনিয়নবাসী ও পাঁচ শতাধিক
কৃষকের ক্ষতি হোক তা হতে দেবেনা বলে জানান। পএিকায় একাধিকবার সংবাদ প্রকাশ হলেও সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের টনক নড়েনি।
কারখানার কয়েকজন কর্মকর্তা সাথে কথা বলে তারা জানান, এ রকম সমস্যা সব কারখানাতেই আছে,আমরা পরিবেশসম্মতভাবে কারখানা চালাচ্ছি।এখন কারও কোনো অভিযোগ থাকার কথা না। জঙ্গলখাইন ইউনিয়নের পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী দিদারুল আলম জানান, কলকারখানা বর্জ্য খালে পড়ে শত শত একর কৃষি জমিতে চাষাবাদ হচ্ছে, এইসব বন্ধ না হলে আগামী মাসে জঙ্গলখাইন ইউনিয়নের জনগণকে নিয়ে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচী পালন করা হবে বলে জানান।