

মোঃখোরশেদ আলম ব্যুরো প্রধান:
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে প্রবাসীকে মানসিক রোগী সাজিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে স্ত্রীর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে পৌর এলাকার শ্রীপুর গ্রামে। ভুক্তভোগী সৌদিপ্রবাসী ছালেহ আহাম্মদ ছুট্টু পৌরসভার মৃত সুরুজ মিয়ার ছেলে।
অভিযোগে জানা যায়, গত ১৭ বছর আগে ছালেহ আহাম্মদ ছুট্টু মুন্সিরহাট ইউনিয়নের পেছাইমুড়ি গ্রামের আবুল হোসেনের মেয়ে নার্গিস আক্তারকে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন। দাম্পত্য জীবনে তাদের দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। সংসারের স্বচ্ছলতার জন্য ছালেহ আহাম্মদ ছুট্টু দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে সৌদিআরব ও কুয়েতে ছিলেন। এ সময়ে সংসার খরচ ও ব্যাংকে জমা রাখার জন্য স্ত্রীর কাছে পর্যাপ্ত রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন। অতিরিক্ত টাকা পেয়ে ছুট্টুর স্ত্রীর নার্গিস আক্তার এবং কি রহমান বলেন আমার ছোট ভাইয়ের বউ বিয়ে পর থেকে উল্টাপাল্টা চলে বেপরোয়া হয়ে উঠে। বিয়ের আগে লোক মাধ্যমে শুনেছি আগেও উল্টাপাল্টা চলাপেরা করতো। গত ১১ মাস আগে ছালেহ আহাম্মদ ছুট্টু প্রবাস থেকে দেশে আসার পর স্ত্রী নার্গিস আক্তার তার সাথে খারাপ আচরণ করতে থাকে। স্ত্রী নার্গিস আক্তার স্বামী ছালেহ আহাম্মদ ছুট্টুকে বাড়িতে বিল্ডিং ঘর নির্মাণের জন্য নামিয়ে দেয়। পাশ^বর্তী লোকজনের কাছ থেকে ধার দেনা করে ঘর নির্মাণ কাজ শুরু করে বর্তমানে ঘরের কাজ মোটামুটি শেষের দিকে। এখন নার্গিস আক্তার স্বামী ছালেহ আহাম্মদ ছুট্টুকে ‘পাগল’ বলে সম্বোধন করে লোকজনের নিকট বলাবলি করতে থাকে। এক পর্যায়ে জোরপূর্বক ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেয় এবং ঘর থেকে বের করে দেয়। এছাড়া নার্গিস আক্তার ছালেহ আহাম্মদ ছুট্টুকে সন্তানদের সাথে দেখা করতে দেয় না। গত ২ জুলাই দুপুরে ছালেহ আহাম্মদ ছুট্টু বাড়িতে গেলে স্ত্রী নার্গিস আক্তার তাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের সহযোগিতায় তাকে বাড়ি থেকে জোরপূর্বক বের করে দেয়। অপরদিকে গত ৪ জুলাই ছালেহ আহাম্মদ ছুট্টু চৌদ্দগ্রাম হাইস্কুল মাঠের গরু বাজার থেকে স্ত্রী নার্গিস আক্তারসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজন জোরপূর্বক তাকে গাড়িতে উঠিয়ে ইনজেকশন পুষ করে নাঙ্গলকোট বাজারস্থ জামান’স ক্লিনিকে ডাঃ এএইচ এম মঞ্জুরুল হকের তত্ত্বাবধানে মানসিক রোগী হিসেবে ভর্তি করে আসে। ঘটনাটি জানাজানি হলে ছালেহ আহাম্মদ ছুট্টুকে দেখার জন্য গত বৃহস্পতিবার তার আত্মীয় স্বজনরা ওই হাসপাতালে গেলে দায়িত্বে থাকা বশির উদ্দিন বলেন, স্ত্রী নার্গিস আক্তার কর্তৃক ছালেহ আহাম্মদ ছুট্টুকে মানসিক রোগী হিসেবে ভর্তি করা হয়েছে। স্ত্রী নার্গিস আক্তার আসলেই ছালেহ আহাম্মদ ছুট্টুকে দেখানো হবে। কিছুক্ষণ পর নার্গিস আক্তার ছোট ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালে গেলে ছুট্টুকে স্বজনদের সাথে দেখা করতে দেয়। উপস্থিত স্বজন এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সামনে ছুট্টু নিজে দাবি করেছে-সে শারিরীকভাবে সুস্থ্য আছে এবং তার স্ত্রী, খায়ের, মুন্না, আব্দুর রহমান, রুহুল আমিন সহ জোরপূর্বক ইনজেকশন পুষ করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। চার দেয়ালের কারণে আমি বের হতে পারি নাই। আমি পরিপূর্ণ সুস্থ্য। স্ত্রীর নিকট প্রবাস থেকে পাঠানো টাকার হিসেব চাইলে আমাকে জোরপূর্বক এখানে ভর্তি করানো হয়েছে। এ বিষয়ে স্থানীয় ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিল শরীফ হাসান বলেন, ছালেহ আহাম্মদ ছুট্টুর পারিবারিক কলহ নিয়ে অনেকবার শালিশ হয়েছে। উপস্থিত গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সামনে সবাই ভালোভাবে চলবে বলে স্বীকারোক্তি দেয়-কিন্তু পরে তার উল্টে করে।
সাবেক কাউন্সিলর মোঃ ইউনুছ বলেন, আমি দায়িত্বে থাকাকালিন কোন দিন ছালেহ আহাম্মদ ছুট্টুর পারিবারিক কলহ আছে বলে শুনিনি। ছুট্টু সুস্থ্য, তাকে মানসিক রোগী সাজানো হয়েছে। অপরদিকে ছালেহ আহাম্মদ ছুট্টুর বড় ভাই আবদুর রহমান বলেন, আমি আলাদা বাড়িতে থাকি। প্রায় সময় ছুট্টুর বউ আমাকে ফোন করে বলে, ছুট্টু ঘরে মারামারি করছে। আমি গিয়ে তাদেরকে শান্ত করার চেষ্টা করি। নাঙ্গলকোট বাজারস্থ জামান’স ক্লিনিকের দায়িত্বে থাকা বশির উদ্দিন বলেন, আমার কাছে তাকে সুস্থ্য মনে হয়েছে। কিন্তু স্ত্রী কর্তৃক ভর্তি করানোয় তাকে আমরা কয়েকদিন চিকিৎসা করেছি। এখন সে আগের থেকেও ভালো আছে।