
স্টাফ রিপোর্টার:
ময়মনসিংহের ত্রিশালে জাল দলিলের মাধ্যমে জমি আত্মসাৎ, নিরীহদের জমি দখল, নিজ দলের নেতাকর্মীদের কাছ থেকে পদ বাগিয়ে দেয়ার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নেয়া এবং সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালানো ও ভূমিদস্যুসহ নানা অপকর্মের আতঙ্কের নাম ইকবাল হোসেন। ত্রিশাল উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ন আহবায়ক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ওই নেতার বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অপকর্মের অভিযোগের পাহাড়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইকবাল এক সময় থাকতেন ভাড়া বাসায়। আজ তাঁর আলিশান বাড়ি, দামি গাড়ি। এখন তিনি কোটি কোটি টাকা আর অঢেল সম্পত্তির মালিক।
স্থানীয়দের দাবি, এসব সম্পদ কোনো বৈধ পথে উপার্জনের নয়। জমির দালালি করে অবৈধ পন্থায় এই সম্পদ অর্জন করেছেন তিনি। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে নিজের নামে গড়ে তুলেছেন ‘ইকবাল টাওয়ার’।
জানা যায়, উপজেলার মোক্ষপুর ইউনিয়নের কৃষক মোসলেম উদ্দিনের ছেলে ইকবাল হোসেন। গ্রামে বেড়ে ওঠা ইকবাল হোসেন পড়াশোনা করেছেন ত্রিশাল নজরুল ডিগ্রি কলেজে। আর্থিকভাবে অসচ্ছল ছিলেন। নজরুল ডিগ্রি কলেজে পড়াশোনার সুবাদে ২০০৩ সালে উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক হয়েছিলেন। ২০০৯ সালের পর রাতারাতি পাল্টে যায় তাঁর জীবন। মোক্ষপুর ও আমিরাবাড়ী ইউনিয়নে বিভিন্ন প্রজেক্টের নামে জমি কেনাবেচা শুরু করেন। জাল দলিল তৈরি আর জমির দালালি করে কয়েক বছরে বনে যান কোটিপতি। এবং রেজিস্ট্রিকৃত ভুয়া দলিল দ্বারা জালিয়াতির মাধ্যমে দেড় কোটি টাকার জমি কমিশন রেজিস্ট্রি করে অর্ধশত পরিবারকে নিঃস্ব করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
উপজেলার খাগাটি মৌজার আব্দুর রহমান গংদের ২একর ১১শতাংস এবং অন্যান্যদের ৩ একর ৭২ শতাংশ জমি জাল দলিলের মাধ্যমে জোরপূর্বক প্যারামাউন্ট হোল্ডিং কোম্পানির নামে রেজিস্ট্রি করে দেয়। এসব অসহায় পরিবারের লোকজন খবর পেয়ে সাব রেজিস্ট্রি অফিস অবরুদ্ধ করে এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। এ অভিযোগের ভিত্তিতে তিন সদস্য কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু ভূমিদস্যু ইকবাল হোসেনের রোষানল থেকে মুক্ত হয়নি ওই কৃষকেরা।
অপরদিকে ত্রিশাল উপজেলার আমিরা বাড়ি গ্রামের মৃত আলাউদ্দিনের পুত্র হেলাল মিয়া জানান, তার পৈত্রিক বাড়ি জোরপূর্বক দখলের উদ্দেশ্যে ইকবাল হোসেন তার লালিত বাহিনী নিয়ে বাড়িতে ভাংচুর করে এবং বাড়ি ছেড়ে দিতে হুমকি দেয়।
ত্রিশাল উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের কাছ থেকেও পদ বাণিজ্যের জুড়ি নেই তার। উপরমহলের নেতাদের দোহাই দিয়ে স্থানীয় নেতাকর্মীদের কাছ থেকে পদ বাগিয়ে দেয়ার কথা বলে ক্রমশ হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা।
উপজেলার রামপুর গ্রামের খলিলুর রহমান জানান, ইকবাল হোসেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর তাকে ভালো পদ দেয়ার কথা বলে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা জানান, অভিযুক্ত ইকবাল হোসেন নানা কায়দায় পদ দেয়ার কথা বলে নেতাকর্মীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এদিকে নিজ দলের নেতা কর্মীদের মধ্যে তার মতবিরোধীদের দমন করতে ইকবাল হোসেন গড়ে তোলেছেন নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী। দলীয় প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে এবং জমি দখলসহ তার বহুমূখী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করেন এই ক্যাডার বাহিনী কে।
হঠাৎ কোটিপতি হওয়ার রহস্যের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ইকবাল হোসেন বলেন, ‘জমির ব্যবসার পাশাপাশি আমার অন্যান্য ব্যবসাও রয়েছে। ব্যবসা করেই আমি এত টাকার মালিক হয়েছি।

Reporter Name 

















