

নূরুল হক, মণিরামপুর প্রতিনিধি:
বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কর্মসূচী অনুয়ায়ী ১১ ফেব্রæয়ারি দেশব্যাপি ইউনিয়ন পর্যায়ে পদযাত্রা সফলের লক্ষ্যে বিকেলে মণিরামপুরে উপজেলা ও পৌর বিএনপি’র যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা সমাপ্তের পরপরই পুলিশ বিএনপি’র বিভিন্ন পর্যায়ের অন্তত: ১০ নেতাকর্মীকে আটক করে। অবশ্য রাতেই আটকদের মধ্য হতে ৪ জনকে ছেড়ে দেয়। রাতেই এসআই সুমন বাদী হয়ে উপজেলা বিএনপি’র আহŸায়ক সাবেক পৌর মেয়র অ্যাড. শহীদ ইকবাল হোসেন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মুছা, সদস্য সচিব মফিজুর রহমান, পৌর বিএনপি’র সভাপতি খায়রুল ইসলাম, সাধারন সম্পাদক আবদুল হাইসহ বিএনপির ৪১ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে নাশকতার মামলা করেন। পুলিশের দাবী নাশকতার উদ্দেশ্যে বিএনপি’র নেতাকর্মীরা বাড়ির উঠানে উপস্থিত হয়ে বৈঠক করছিল। সেখান থেকে ৬ নেতাকর্মীকে আটক এবং তিনটি ককটেল উদ্ধার করা হয়। এ সময় ককটেল বিষ্ফোরিত হয়ে পুলিশের চার সদস্য সামান্য আহত হবার দাবী করেন। এরা হলেন এসআই মলয় বসু, ইব্রাহিম হোসেন, এএসআই কাজল চ্যাটার্জী ও কনষ্টেবল এম,এ রশিদ। এদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ দিকে থানা বিএনপি’র আহŸায়ক অ্যাডভোকেট শহীদ ইকবাল হোসেন পুলিশের ন্যাক্কারজনক ভূমিকার নিন্দা জানিয়ে অভিযোগ করেন, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছ থেকে মৌখিক পূর্বানুমতি নিয়ে বাড়ির উঠানে যৌথসভার আয়োজন করা হয়।
দলীয় সূত্রে জানাযায়, দলীয় কার্যালয়ের পাশে উপজেলা বিএনপি’র আহŸায়ক অ্যাড. শহীদ ইকবাল হোসেনের প্রাচীরঘেরা বাড়ির উঠানে বুধবার বিকেল চারটার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে যৌথ সভা শুরু হয়। অ্যাড. শহীদ ইকবাল হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপি’র সদস্য আবদুস সালাম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপি’র সদস্য মোহাম্মদ মুছা, যশোর নগর বিএনপি’র সাত নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান।
নেতাকর্মীসহ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, যৌথসভা শেষ হওয়ার প্রাক্কালে বিকেল পাঁচটার দিকে শহীদ ইকবালের বাড়ির গেট (যৌথ সভার স্থান), দলীয় কার্যালয়সহ আশপাশ এলাকায় পোশাকধারী ও সাদা পোশাকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ অবস্থান নেন। বিএনপি নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন শান্তিপূর্নভাবে সভা শেষ করে শহীদ ইকবালের বাড়ির গেটের বাইরে গেলেই পুলিশ সেখান থেকে মুক্তিযোদ্ধা আকতার হোসেন খান, শ্যামকুড় ইউনিয়ন বিএনপি’র যুগ্ম সম্পাদক আনছার আলী, যশোর নগর বিএনপি’র সাত নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানকে আটক করে। পরে দলিয় কার্যালয়ের সামনে থেকে আটক করা হয় কুলটিয়া ইউনিয়ন বিএনপি’র যুগ্ম আহŸায়ক মাষ্টার নুরুল ইসলাম, সদর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারন সম্পাদক আব্দুল কাদের, চালুয়াহাটি ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি ইউপি সদস্য বিল্লাল হোসেন, মাহাবুবুর রহমান, পৌরসভার বিজয়রামপুর-জুড়ানপুর ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি আজিজুর রহমান, ঢাকুরিয়া ইউনিয়ন বিএনপি নেতা রোস্তম আলীসহ অন্তত: ১০ নেতাকর্মীকে। পরে অবশ্য রাত আটটার দিকে এদের মধ্যে থানা বিএনপির যুগ্ম আহŸায়ক মুক্তিযোদ্ধা আকতার হোসেন খান, মাষ্টার নুরুল ইসলাম ও মাষ্টার আব্দুল কাদেরসহ চারজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (সার্বিক) শেখ মনিরুজ্জামান জানান, নাশকতার জন্য বাড়িতে বিএনপি’র নেতাকর্মীরা বৈঠক করছিলেন। সেখান থেকে ছয় নেতাকর্মীকে আটক করে তিনটি ককটেল উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় এসআই সুমন বাদি হয়ে থানা বিএনপির আহŸায়ক সাবেক পৌর মেয়র অ্যাড. শহীদ ইকবাল হোসেন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মুছা, জেলা বিএনপি নেতা আবদুস সালামসহ ৪১ নেতাকর্মীর নামে নাশকতার একটি মামলা করেন। আটক ৬ নেতাকর্মীকে বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।