

রিপোর্টার .কলকাতা থেকে শম্পা দাস ও সমরেশ রায়:
সম্পূর্ণ বৈদিক মতে লগ্ন ছাড়া বিয়ে। ৯ ফেব্রুয়ারী সন্ধি ৭ টা থেকে শুরু হয় এক অভিনব বিয়ে, কলকাতার স্বভূমিতে,, মহিলা পুরোহিত পরিচালিত ছক ভাঙ্গার বিয়ের অনুষ্ঠান ও লগ্ন ছাড়া বিয়ে শুরু হয় আতিথিয়তার মধ্য দিয়ে , এবং সুন্দর একটি পরিবেশের মধ্য দিয়ে, কোনরকম দিনক্ষণ দেখে নয়, মত ও পরিবারের মত নিয়ে এই বিয়ে জমে উঠল রাতভর, এবং অতিথিদের আনাগোনা…..। ৯ই ফেব্রুয়ারি যাঞ্জশ্রেণী আর সৌমিকের বিয়ে, ভাবছেন নিশ্চয়ই প্রতিদিন কতই তো বিয়ে হয় , এ আবার এমন কি ব্যাপার, তবু কিছুটা আলাদা না হলে আর এই লেখার প্রয়োজন হতো না। পেশায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার আত্মপ্রত্যয়ী যাঞ্জশ্রেণীর চরিত্রে আধুনিকতা আর ঐতিহ্যের অপূর্ব মিশেল, তাই বিয়ের দিনটি পঞ্জিকা দেখে, লগ্ন নির্ধারণ করে ঠিক করা হয়নি ,হয়েছে অন্যান্য সুবিধের বিচারে ভবিষ্যৎ জীবন সঙ্গী সৌমিক ও যজ্ঞের প্রগতিশীল মানসিকতার, তাই পারস্পরিক বোঝাপড়া করেছেন তারা, বাঙালী বিয়ের যুক্তিগ্রাহ্য আনন্দময় অনুষ্ঠানগুলোকে রেখে, বর্জন করেছে পুরুষতান্ত্রিক নারীর মর্যাদা হানিকর নিয়ম গুলোকে, স্বনির্ভর নারী দানের সামগ্রী নয়, এক মুঠো চাল ছুড়ে দিয়ে বাবা-মায়ের ঋণ ও শোধ করা যায় না। সুতরাং দিনের পর দিন শিক্ষিত অশিক্ষিত নির্বিশেষে সেই নিয়মের গন্ডালিকায় গা না ভাসিয়ে হচ্ছে এই বিয়ে, বিয়ে হল দুই প্রাপ্তবয়স্ক নারী ও পুরুষের যৌথ জীবন যাপনের অঙ্গীকারের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, তাই এই বিয়েতে দুই পক্ষের অভিভাবকরা যাঞ্জশ্রেণী ও সৌমিকের সঙ্গে বিয়ের অনুষ্ঠানে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। সামগ্রিকভাবে অনুষ্ঠানটির পৌরহিত করেছেন সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যিক অধ্যাপিকা নন্দিনী ভৌমিক ও তার সহযোগীরা, বৈদিক মন্ত্রের যথাযথ উচ্চারণ ও তন্ত্রের ব্যাখ্যা করে সঙ্গীতের সাহচার্যে ঐতিহ্যবাহী আবহাওয়া ,কন্যা সম্প্রদান বা কনকাঞ্জনীর মতো নারী ও তার পরিবারের পক্ষে অবমাননা কর নিয়মগুলো বাদ পড়ছে, আবার মালাবদল, শুভদৃষ্টি ও সিঁদুর দানের মত নিয়ম গুলো বাত্য থাকছেন না, নন্দিনী ভৌমিকের শিক্ষাগুরু অধ্যাপিকা গৌরী ধর্মপাল সৃষ্ট এই বিবাহ পদ্ধতির নাম পুরো নতুন বৈদিক বিবাহ , আইনি বিয়ে আর বিয়েকে ক্যামেরাবন্দি করার দায়িত্বেও রয়েছেন মহিলারা ,যাঞ্জশ্রেণী ও সৌমিকের প্রথাভাঙ্গা এই বিয়ের মতোই বৈদিক মন্ত্র রবীন্দ্র সংগীতকে পাথেয় করে ভবিষ্যতে আরো দাম্পত্য সম্পর্কের বন্ধন অটুট হোক ,সমাজ ভাবনা হয়ে উঠুক সমদর্শী , সংক্ষিপ্ত কথার মধ্য দিয়ে জানাই যে গেল যে তারা এই ধরনের অনুষ্ঠান করেছেন এখনকার ছেলেমেয়েদের মনে প্রেরণা জোগাতেই। আগের কিছু নিয়ম-কানুনকে , কিছুটা পরিবর্তন করার মূল উদ্দেশ্যই অনুষ্ঠানে মূল বিষয়, এই মতকে পরিবারের সকলে এবং বন্ধুবান্ধবরা সহযোগিতা করেছেন ও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তাদের পাশে রয়েছেন, …. প্রায় ৩০০ নিমন্ত্রিতদের, খাওন দাওন থেকে শুরু করে আতিথেয় কোন কিছুর অভাব ছিল না অন্যদিকে।।