মোঃ রাসেল হুসাইন, নড়াইলঃ
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার বিলদুড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহিউদ্দিন মোরাদের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় স্কুলের জমি দাতার ছেলে প্রবাসী সাইফুল্লাহ’র পক্ষে তার স্ত্রী মনিরা বেগম ও জা সোহানা সিদ্দিকা (মনিহার) ইলিয়াছাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মল্লিক মনিরুল ইসলাম ও ওয়ার্ড সদস্য জাকির হোসেন শেখ ( মিঠু) বরাবরে একটি লিখতি অভিযোগ দাখিল করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় ০২ জুন (রবিবার) দুপুর সাড়ে ১২ টায় সরেজমিনে ওই স্কুলে গেলে ৩ জন মহিলা শিক্ষককে পাওয়া যায় এবং জানা যায় প্রাক-প্রাথমিক থেকে ৫ম শ্রেনী পর্যন্ত মোট ৭৭ জন শিক্ষার্থী নিয়ে চলছে ওই স্কুল। প্রধান শিক্ষকসহ অন্য কোন শিক্ষকের উপস্থিতি নেই এবং কোন ক্লাসে ১ টি শিক্ষার্থীও নেই। এ বিষয়ে উপস্থিত শিক্ষকদের কাছে জানতে চাইলে শাহানাজ শারমিন রোজি বলেন, শিক্ষার্থীরা পার্শ্ববর্তী একটি স্কুলে বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টে গিয়েছে এবং প্রধান শিক্ষক উপজেলায় ট্রেনিংয়ে আছেন। স্কুলটা বাগানের ভিতর হওয়ায় শিক্ষার্থীরা ভয়ে আসতে চায়না তাই প্রতি ক্লাসে ৪/৫জন শিক্ষাথী হাজির হয়। তবে টুর্নামেন্ট ১ টার দিকে শেষ হলেও সহঃ শিক্ষক মনোয়ার কবির তনু এবং কোন শিক্ষার্থী আর স্কুলে আসেনি।
তিনটি শ্রেণী কক্ষের দুটিতেই রাজমিস্ত্রীদের মালামাল তালাবদ্ধ অবস্থায় আছে। অভিযোগে আছে শিক্ষার্থী হাজির না হলেও সরকারী নিয়মে উপস্থিতি ঠিক রাখতে নিজেরাই হাজিরা খাতা সমন্বয় করে নেন এবং ১১/১২ জন শিক্ষার্থী হাজির হয়। তবে হাজিরা খাতা যাচাই করে দেখা যায় প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণীর এপ্রিল ও মে মাসের হাজিরা খাতায় কোন শিক্ষার্থীর উপস্থিতি নেই।
এ বিষয়ে শাহানাজ শারমিন রোজি বলেন, ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত গ্রীস্মের ছুটি ছিল বলে দ্বায় এড়ানোর চেষ্টা করে অবশেষে নিজেদের ভুল স্বীকার করেন।
এ ছাড়া প্রতিদিন ১১ টা থেকে ১২ টার মধ্যে বিদ্যালয় ছুটি দিয়ে সবাই চলে যায় বলে অভিযোগে উল্লেখ আছে এবং ২/৩ বছর পূর্বে পূর্ব পাশের পরিত্যাক্ত বিল্ডিংয়ের মেরামতের জন্য ২ লক্ষেরও বেশী টাকার বাজেট হয়। আনুমান ২০ হাজার টাকা খরচ করে বাকি টাকা আত্মসাৎ করেন প্রধান শিক্ষক। আবার নতুন করে ১৪ লক্ষ টাকার ওয়াশ ব্লকের কাজ আসছে। যা তদারকি করছেন প্রধান শিক্ষক। এখানেও অনিয়ম হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করেছেন।
স্থানীয় মেম্বার জাকির হোসেন শেখ ( মিঠু) অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, দায় সারা ভাবে চলছে বিলদুড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়। তিনি কয়েকদিন ১১/১২ টার স্কুলে গিয়ে কাউকে না পেয়ে ছবি তুলে এনেছেন বলে জানান। স্কুলের মান উন্নয়নে প্রধান শিক্ষকের বদলী একান্ত প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন। এ ছাড়া স্কুলে একটা পকেট কমিটি করে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে চলেছে ওই প্রধান শিক্ষক বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে ইলিয়াছাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মল্লিক মনিরুল ইসলাম অভিযোগ প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত হলে স্থানীয় গন্যমান্যদের সমন্বয়ে প্রতিবেদন তৈরি করে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে অবগত পূর্বক বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহনের সুপারিশ করবো।
এ দিকে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মহিউদ্দিন মোরাদের দেখা হলে তিনি সাংবাদিকদের সাথে এ বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার সাইফুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।