মানিক মিয়া গাজীপুর প্রতিনিধি:
গাজীপুরের মেম্বারবাড়ী (বানিয়ারচালা) এলাকায় জায়ান্ট টেক্সটাইল লিমিটেড কারখানায় ওয়াশিং মেশিনের ড্রায়ারে শ্রমিক নয়ন মিয়া (২২) মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর স্ত্রী ইমা আক্তার বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় তিনজনকে আসামী করা হয়েছে। সোমবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে পুলিশ আসামীদেরকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছে। জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হালিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত নয়ন মিয়া ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চর বড়বিলা (চরঈশ্বরদিয়া) গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে। সে মেম্বারবাড়ী (বানিয়ারচালা) এলাকার কালামের বাড়ীতে ভাড়া থেকে ওই কারখানায় সহকারী অপারেটর (হেলপার) পদে চাকরি করতেন।
আসামীরা হলেন ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা উপজেলার ইশ্বরদী গ্রামের মৃত ওয়াদুদ মোড়লের ছেলে নাসিম মোড়ল (২৫), ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার পূর্বকান্দা গ্রামের হাছেন আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম (২৫) এবং একইজেলার ভালুকা উপজেলার তামাট গ্রামের নূর মোহাম্মদের ছেলে আল আমিন (২৮)। তারা নিহত নয়নের সহকর্মী এবং ওয়াশ সেকশনে কর্মরত।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও জয়দেবপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বাহার জানান, মামলার বাদী ও নিহতের স্ত্রী ইমা আক্তার মামলায় অভিযোগ করে তার স্বামী নয়ন মিয়াকে (২২) পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে মরদেহ ওয়াশিং মেশিনের ড্রায়ারের ভেতরে লুকিয়ে রাখে।
নয়ন মিয়ার স্ত্রী ইমা আক্তার জানান, শনিবার (০৯ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টায় তার স্বামী নয়ন অফিসের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ডিউটি ছিল। দুপুরে মধ্যাহ্ন বিরতিতে বাসায় এসে খাওয়া-দাওয়া করে আবার কর্মস্থলে চলে যায় সে। সন্ধ্যায় তার স্বামীর ফোন করে জানায় ছুটি হওয়ার সাথে সাথে সে বাসায় চলে আসবেন। ছুটির আধাঘন্টা পরে বাসায় না আসলে তার মুঠোফোনে ফোন করলে বন্ধ পাওয়া যায়। পরদিন রবিবার (১০ নভেম্বর) সকাল ৬টার দিকে বাড়ির মালিক কালাম তাকে জানায় তার স্বামী নয়নের লাশ অফিসের ওয়াশিং মেশিনের ড্রায়ারের ভেতরে পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে তিনিসহ স্বজনেরা কারখানায় গিয়ে দেখেন নয়নের শরীরের বিভিন্ন গরম পানিতে দগ্ধ এবং চামড়া ছিলে গিয়ে চেহারা বিকৃত হয়ে গেছে। মরদেহ দেখে তাদের সন্দেহ হয় নয়নকে হত্যা করা হয়েছে। আসামীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে তার স্বামীকে হত্যা করে লাশ মেশিনের ভেতরে রেখে দেয়। ধারনা করা হচ্ছে কারখানার ভিতরে আভ্যন্তরীণ কোনো বিষয় নিয়ে তাকে এভাবে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার রহস্য ধামাচাপা দেয়ার জন্য এবং মরদেহ গুম করার চেষ্টায় এ ধরনের প্রক্রিয়া করেছিল।