গাজীপুর প্রতিনিধ :
৫ই আগস্ট সরকারের পরিবর্তনের পর দেশের আইন শৃঙ্খলার পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়। এর মধ্য দিয়েই গাজীপুরের বিভিন্ন অঞ্চলে জেগে উঠে ভূমি দস্যুরা। বনের খাস জমি দখল করে বাড়ি ঘর তোলার যেনো এক প্রতিযোগিতা শুরু হয়। রাজেন্দ্রপুর রেঞ্জের আওতাধীন মনিপুর বিট এলাকায় ইতোমধ্যে প্রায় ২০ একর বনভূমির জায়গা দখল হয়ে গেছে যেখানে প্রায় ৫০০ এর উপর নতুন ঘর তৈরি হয়েছে। যারা ঘর গুলো তৈরি করেছেন তারা বেশির ভাগই উচ্চ শ্রেণির এবং ভাড়া দেয়াড় উদ্দেশ্যে তৈরি করেছেন।
আরেক দল অসাধু লোকজন সুযোগ পেয়ে সামাজিক বনায়নের গাছ কেটে নতুন ঘর তৈরি করছেন এবং উচ্চ মূল্যে বনের জায়গা বিক্রি করে দিচ্ছেন। মূলত প্রভাবশালী স্থানীয়রা এর সাথে জড়িত বলে জানিয়েছে একটি সূত্র।
সরজমিনে মনিপুর বিট এলাকা ঘুরে দেখা যায়,নয়াপাড়া ফুটবল খেলার মাঠ সহ আশেপাশের জমি সংরক্ষিত বনভূমি অন্তর্গত।আর এই মাঠের তিন পাশে গড়ে উঠেছে অসংখ্য নতুন ঘড়।বর্তমানে মাঠের পশ্চিম পাশে সাবেক সিএস ১২২০ নং দাগে ছালাম মতিনের ছেলে রবিউল এর কাছে বনের জমি বিক্রি করে।আর এখন সেখানে ৬ রুমের আধাপাকা টিন শেড ঘড় নির্মাণ কাজ করছে। মনিপুর থেকে ভবানীপুর যাওয়ার পাকা রাস্তার পাশে সামাজিক বনায়নের আকাশমনি বাগান গাছ কেটে সোহাগ দোকন সহ বেশ কয়েকটি ঘড় নির্মাণ করেছে।নয়াপাড়া আশ্রমচালা কামাল মোল্লা বনের জমি তিনটি প্লট করে তিন জনের কাছে বিক্রি করে ঘড় নির্মাণ করে দিয়েছে।বেগমপুর মেম্বার মার্কেটের পাশে বনের জমি দখল করে চার রুমের ঘড় নির্মাণ করেছে সাদ্দাম হোসেন।মিনার মসজিদের পশ্চিম পাশে দুই রুমের ঘড় নির্মাণ করছে নাজমা বেগম এর ছেলে নাজমুল। আবুতালেবের মসজিদের পশ্চিম পাশে মান্নান এর বাড়ির পূর্ব পাশে খোরসেদ মিয়ার ছেলে কুদ্দুস মিয়া
৬ রুমের বিল্ডিং ঘড় নির্মাণ করেছে।কাতলামাড়া পুকুরের চারপাশে একাধিক ঘড় নির্মাণ করা হয়েছে।এছাড়াও মনিপুর বাজার,মনিপুর মধ্যপাড়া,মনিপুর নামাপাড়া,মনিপুর উত্তরপাড়া,নৌলাপাড়া, বেগমপুর এলাকায় অসংখ্য ঘড় বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। বর্তমানে নতুন করে কোন প্রকার ঘড়বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে না।
তবে যদি উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা না করা হয় তাহলে আবার এই রকম ভাবে বনের জমি দখল উৎসব চলতে পারে বলে ধারণা করছেন অনেকে।এতে করে বিনষ্ট হয়ে যাবে বন,বড় ধরনের হতের সম্মুখীন হবে পরিবেশ, প্রকৃতি হারাবে তার ভারসামতা।
বনের জমি দখলদার উচ্ছেদের বিষয়ে জানতে চাইলে রাজেন্দ্রপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা নাছিমা আক্তার বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা ছাড়া কোন প্রকার বক্তব্য দেয়া যাবেনা।
তবে বর্তমান মনিপুর বিট কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান এই বিটে যোগদানের পর থেকে দখল প্রবনতা কমেছে।তিনি ইতোমধ্যে দখল প্রবন বিভিন্ন এলাকা থেকে চারজন আসামী কে ধরে আদালতে সোপর্দ করেছেন।