মোঃখোরশেদ আলম ব্যুরো প্রধান:
সম্পত্তির জের ধরে চৌদ্দগ্রামের আলোচিত ইসরাফিল হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার দায়ে নিহতের মা রিনা বেগম বাদী হয়ে রোববার রাতে ৬ জনকে আসামী করে চৌদ্দগ্রাম থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এজহারভুক্ত আসামীরা হলো: মোক্তল হোসেন, তার স্ত্রী রহিমা বেগম, মেয়ে নাছরিন, আইরিন ও মৌসুমীকে সোমবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এদিকে মামলার অন্যতম আসামী সজিব ঘটনার পর থেকে পলাতক থাকায় তাকে ধরতে তার আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িঘরে পুলিশ দফায় দফায় অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
অপরদিকে ময়নাতদন্ত শেষে নিহত ইসরাফিলের লাশ স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করা হলে সোমবার বিকাল চারটায় তার নিজ বাড়ীতে জানাযা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। জানাযার নামাজে অংশগ্রহণ করতে নিহতের আত্মীয়-স্বজনসহ এলাকাবাসী ও উৎসুক জনতার ঢল নেমেছে। ইসরাফিলের লাশ তার বাড়ীতে পৌঁছলে স্বজনদের গগনবিদারী আহাজারিতে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠে। ভাইয়ের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে সোমবার সকাল চারটায় ওমান থেকে নিহতের বড় ভাই ইসমাইল হোসেন ও ছোট ভাই আরমান হোসেন বাড়ীতে এসে পৌঁছে। ভাইয়ের লাশের খাটের পাশে দুই ভাই, মা-বোন ও নিহতের স্ত্রী কান্নায় বারবার মূর্ছা যাচ্ছে। নিহতের ১১ মাস বয়সী ছেলে ইরফান হোসেন জানেনা তার পিতা কিছুক্ষণ পরেই চিরদিনের জন্য বিদায় নিবে। কিন্তু তার অপলক চাহনী বলছে তার বাবা ঘুমিয়ে আছে।
তারাশাইল গ্রামের ওমান প্রবাসী হানিফ মিয়ার ছেলে নিহত ইসরাফিল এর সাথে ২০২০ সালের ২১ সেপ্টেম্বর একই ইউনিয়নের আতাকরা গ্রামের আবু সাঈদের কন্যা আসমাউল হুসনা রিয়ার বিয়ে হয়। প্রিয়তম স্বামী ইসরাফিলকে বিদায় দিতে গিয়ে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন নিহতের স্ত্রী রিয়া।
উল্লেখ্য, চৌদ্দগ্রামের তারাশাইলে বিরোধপূর্ণ এক শতাংশ জমি দখলকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় মো: ইসরাফিল (২৮) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার (৮ মে) দুপুরে উপজেলার কনকাপৈত ইউনিয়নের তারশাইল-দূর্গাপুর গ্রামে। এ সময় দু’পক্ষের মধ্যকার হামলা-পাল্টা হামলায় ২ নারীসহ কমপক্ষে তিনজন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে এবং অপর দু’জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।